ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সক্ষমতা হারাচ্ছে কমলাপুর, বিকল্প আইসিডি গাজীপুরে

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৬
সক্ষমতা হারাচ্ছে কমলাপুর, বিকল্প আইসিডি গাজীপুরে

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের কাছে অবস্থিত আইসিডি (ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো) বাণিজ্যিক বান্ধব নয়। দিনে দিনে এটি সক্ষমতা হারাচ্ছে...

ঢাকা: কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের কাছে অবস্থিত আইসিডি (ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো) বাণিজ্যিক বান্ধব নয়। দিনে দিনে এটি সক্ষমতা হারাচ্ছে।

একমাত্র কমলাপুর আইসিডি’র সক্ষমতা হারানোর কারণে রেলপথে ঢাকায় কনটেইনার পরিবহনও কম হচ্ছে বলে জানায় রেলপথ মন্ত্রণালয়।
 
এজন্য কমলাপুর থেকে স্বল্প দূরত্বে অবস্থিত গাজীপুরের ধীরাশ্রম রেলস্টেশনের পাশে একটি বিকল্প আইসিডি নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। নতুন প্রস্তাবিত আইসিডি’র সক্ষমতা কমলাপুরের চেয়ে বেশি হবে। ফলে চট্টগ্রাম থেকে রেলপথে আসা প্রয়োজনীয় কনটেইনার কমলাপুরের পাশাপাশি গাজীপুরেও খালাস করা হবে।
 
রেলপথ মন্ত্রণালয়ে সচিব ফিরোজ সালাহ্ উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় রেলপথে আরও অধিক পরিমাণে কনটেইনার পরিবহন করতে চাই। কিন্তু বেশি কনটেইনার খালাসের ব্যবস্থা কমলাপুর আইসিডি’তে নেই। ইচ্ছা করলেই কমলাপুর আইসিডি সম্প্রসারণ করতে পারবো না। ফলে গাজীপুরে আরও একটি আইসিডি নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। এটি নির্মাণ করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। তবে আমরা এখনও ডোনার পাইনি’।
 
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ভূমি অধিগ্রহণে জটিলতা ও জমির চড়া মূল্যের কারণে কমলাপুর আইসিডি সম্প্রসারণ করা সম্ভব নয়। ফলে চট্টগ্রাম থেকে হ্যান্ডেলিং করা কনটেইনারের মাত্র ১০ শতাংশ রেলপথের মাধ্যমে ঢাকায় পরিবহন করা যায়।
 
চট্টগ্রাম বন্দরের ৭০ শতাংশ কনটেইনারই ঢাকায় আনা হয়। কমলাপুর আইসিডি’র সক্ষমতা কম থাকায় ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম থেকে কনটেইনার পরিবহন করা হচ্ছে। পরিমাণ ভেদে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আইসিডি পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের কনটেইনার পরিবহন ভাড়া ৯ হাজার ৭০০ টাকা থেকে ২২ হাজার ৬০০ টাকা। রেলপথের চেয়ে সড়কপথে কনটেইনার পরিবহন অনেক ব্যয়বহুলও।
 
সবচেয়ে ব্যস্ততম ও লাভবান করিডোর ঢাকা-চট্টগ্রাম। বছরে চট্টগ্রাম বন্দরে গড়ে প্রায় ১২ শতাংশ হারে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সংখ্যা বাড়ছে। রফতানি ও আমদানি বাণিজ্যের প্রসারে এ করিডোরকে আরও উন্নত করার পরিকল্পনা করছে সরকার।
 
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০০৫-২০০৬ সালে হ্যান্ডেলিং করা কনটেইনার সংখ্যা ছিল ৮ লাখ ২৭ হাজার টুয়েন্টি ফিট ইকুইভ্যালেন্ট ইউনিট (টিইইউ)। ২০০৬-২০০৭ সালে  এ সংখ্যা ৯ লাখে উন্নীত হয়েছে।

আর রেলপথে ৩০ শতাংশ কনটেইনার পরিবহন করা হলে এর সংখ্যা ২ থেকে ৩ লাখ টিইইউ। অথচ কমলাপুর আইসিডি’র সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ৯০ হাজার ইইইউ।   এ প্রেক্ষিতে গাজীপুরের ধীরাশ্রমে রেল বেইজড ৩ লাখ ৫৪ হাজার টিইইউ ক্ষমতা সম্পন্ন আইসিডি নির্মাণ করা হবে।

এটি পূবাইল স্টেশনের সঙ্গে নতুন রেল সংযোগ স্থাপন করবে। প্রস্তাবিত আইসিডি দিয়ে যেন চট্টগ্রাম বন্দর এলাকার সঙ্গে রেলপথে যোগাযোগ ব্যবস্থাও আরও উন্নত হয়, সে কথাও চিন্তা করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে চট্টগ্রাম পোর্ট ইয়র্ডের মানোন্নয়ন, রোলিংস্ট সংগ্রহ ও ফৌজদারহাট পর্যন্ত অতিরিক্ত মিটারগেজ সিঙ্গেল রেললাইন নির্মাণ করা হবে।

এসব কার্যক্রম বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে করে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে। এর পরেই মূল প্রকল্প গ্রহণ করবে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
 
বাংলাদেশ সময়: ০১৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৬
আরএটি/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।