ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পরিবর্তনশীল যুদ্ধ কৌশল অনুসারে সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন হচ্ছে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৬
পরিবর্তনশীল যুদ্ধ কৌশল অনুসারে সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন হচ্ছে ছবি: সংগৃহীত

পরিবর্তনশীল যুদ্ধ কৌশল ও নতুন প্রযুক্তির দিকে নিবিড়ভাবে লক্ষ্য রেখে আধুনিক সশ্রস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ঢাকা: পরিবর্তনশীল যুদ্ধ কৌশল ও নতুন প্রযুক্তির দিকে নিবিড়ভাবে লক্ষ্য রেখে আধুনিক সশ্রস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) ঢাকার মিরপুর সেনানিবাসের শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সে ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স এবং আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স-২০১৬ এর গ্রাজুয়েশন সেরিমনিতে এ কথা জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পেশাদার ও প্রশিক্ষিত সশস্ত্র বাহিনী প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকার অনবরত কাজ করে যাচ্ছে।

সরকার পরিবর্তনশীল যুদ্ধ কৌশল ও প্রযুক্তির দিকে নিবিড়ভাবে লক্ষ্য রাখছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিনিয়ত সশস্ত্র বাহিনীর সামর্থ্যকে পুনর্মূল্যায়ন করে যাচ্ছি এবং একবিংশ শতাব্দীর বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নের জন্য সময়োচিত সকল পদক্ষেপ গ্রহণে সচেষ্ট আছি’।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে আমরা নতুন প্রযুক্তি সম্বলিত আধুনিক সরঞ্জামাদির সরবরাহ নিশ্চিত করেছি। সর্বোত্তম প্রশিক্ষণ প্রদানের তাগিদে প্রয়োজনীয় সংখ্যক অবকাঠামো তৈরি করেছি’।

উন্নত প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন বাহিনী গড়ে তোলার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘জাতীয় অগ্রগতি এবং নিরাপত্তার স্বার্থে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারকেও উৎসাহিত করছি’।

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে এর কারণ, উৎস  ও প্রতিকারের উপায় খুঁজে বের করার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী।

জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদকে বিশ্বব্যাপী উদ্বেগজনক সমস্যা এবং সভ্যতা বিনাশী হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন, ‘সরকার জঙ্গি নির্মূল ও সন্ত্রাসবাদ দমনে প্রয়োজনীয় সব রকম ব্যবস্থা নিয়েছে। সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রশিক্ষিত ও প্রস্তুত রেখেছি’।

সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মাটিকে অতীতের মতো সন্ত্রাস বা বিছিন্নতাবাদী তৎপরতার জন্য আর কখনো কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক শান্তিপূর্ণ দেশ হিসাবে আমাদের মর্যাদা বিশ্বে অক্ষুন্ন থাকবে‘।

ভৌগলিক অবস্থান বিশ্ব রাজনীতিতে বাংলাদেশের কৌশলগত গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে আঞ্চলিক ঐক্য উন্নয়নে বাংলাদেশ অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা রাখছে।

দেশে ও বিদেশে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রশংসনীয় অবদানের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা যেকোনো দুর্যোগ ও বিপর্যয়ে নিষ্ঠা ও একাগ্রতার সঙ্গে জনগণের পাশে দাঁড়ান। অবকাঠামো নির্মাণেও তাদের নির্ভরযোগ্যতা দেশে ও দেশের বাইরে সমাদৃত।

সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন,  সরকার দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিরতিহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

গভীর সমুদ্রবন্দর, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, মেট্রোরেল, আন্তঃদেশীয় রেল প্রকল্প ও এলএনজি টার্মিনাল, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে দেশের প্রথম টানেল এবং পদ্মাসেতু নির্মাণের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন,  অবকাঠামো খাতের এই যুগান্তকারী প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের কথা আগে কেউ ভাবেনি।

ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তাদের অর্জিত জ্ঞান, ইচ্ছাশক্তি এবং অঙ্গীকার দিয়ে জনগণ তথা দেশকে স্থিতিশীল পরিস্থিতি, উন্নয়ন এবং আত্মনির্ভরশীলতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা।

একই সঙ্গে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজকে তাদের উন্নত মান ও তার ক্রমাগত উন্নয়ন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।

এ বছর পাস করা দেশি-বিদেশি ৭৮ জন প্রশিক্ষণার্থী ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স সনদ পান। যার মধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌ-বাহিনী, বিমান বাহিনী, সিভিল সার্ভিস, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের ৫২ জন প্রশিক্ষণার্থী রয়েছেন।

এছাড়া ব্রুনাই, মিশর, পাকিস্তান, ওমান, ভারত, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, শ্রীলংকা, সৌদি আরব, মায়ানমার, নেপাল ও তানজানিয়ার সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর ২৬ জন বিদেশি প্রশিক্ষণার্থী এ বছর ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্সে অংশ নেন।

আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্সে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌ-বাহিনী, ও বিমান বাহিনীর ৩৫ প্রশিক্ষণার্থী উত্তীর্ণ হন।

প্রধানমন্ত্রী ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স এবং আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স উত্তীর্ণদের হাতে সনদ তুলে দেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ইকবাল সোবহান চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী প্রধানসহ সামরিক ও বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের কমান্ড্যান্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ারদী।

** সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের কারণ ও উৎস খুঁজে বের করতে হবে

বাংলাদেশ সময়: ১৬২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৬
এমইউএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।