ঢাকা, সোমবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নিখোঁজদের আশ্রয় দিতেন জঙ্গি খাদেমুল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৬
নিখোঁজদের আশ্রয় দিতেন জঙ্গি খাদেমুল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

জঙ্গি তৎপরতায় অংশগ্রহণের জন্য যারা প্রাথমিক পর্যায়ে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হতেন তাদের আশ্রয় দিতেন জঙ্গি খাদেমুল ইসলাম। সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে রাজধানীর পল্লবী এলাকা থেকে জেএমবির সদস্য খাদেমুল ইসলাম ওরফে খাদেম ওরফে গাজোয়াতুল (২৮) ও আতিকুর রহমান ওরফে মিলনকে (২১) আটক করে র‌্যাব।

ঢাকা: জঙ্গি তৎপরতায় অংশগ্রহণের জন্য যারা প্রাথমিক পর্যায়ে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হতেন তাদের আশ্রয় দিতেন জঙ্গি খাদেমুল ইসলাম। সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে রাজধানীর পল্লবী এলাকা থেকে জেএমবির সদস্য খাদেমুল ইসলাম ওরফে খাদেম ওরফে গাজোয়াতুল (২৮) ও আতিকুর রহমান ওরফে মিলনকে (২১) আটক করে র‌্যাব।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫টি জিহাদি বই, ২টি ব্যাগ, বিভিন্ন ধরনের লিফলেট, ৩৭ হাজার ৫৯৩ টাকা ও ৪টি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) কারওয়ান বাজারে ৠাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আটকদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে এ তথ্য জানান র‌্যাব-৪ এর কমান্ডিং অফিসার (সিও) অতিরিক্ত উপ মহাপরিদর্শক খন্দকার লুৎফুল কবির।

লুৎফুল কবির বলেন, জিহাদের উদ্দেশ্যে বাড়ি ছেড়ে আসা জঙ্গিদের সেল্টার দিত খাদেমুল। এজন্য বিভিন্ন সময় বিভন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে অর্থ পেতো সে। খাদেমুলকে অর্থ সরবরাহকারীদের মধ্যে একজন অপর আটক সদস্য আতিকুর রহমান। আতিকুর মূলত সংগঠনের অর্থ বহন করে নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে দিতেন।

আতিকুর রহমান মিলনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে লুৎফুল কবির জানান, সে ২০১১ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৪.৫০ পেয়ে এসএসসি পাশ করেন। তারপর ডিমলা ইসলামিয়া ডিগ্রি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৩.৫০ পেয়ে ২০১৪ সালে এইচএসসি পাশ করে এবং বিশ্ববিদ্যালয় কোচিং করার জন্য রংপুরে অবস্থান করে।

এরপর আতিকুর রহমান মিলন সাভার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ২০১৫ সালে সমাজকর্ম বিষয়ে অনার্স ১ম বর্ষে ভর্তি হন। এখানে কিছুদিন ক্লাস করার পর পারিবারিক অভাব-অনটনের কারণে তার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। মিলনের সাথে ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসের দিকে ফেইসবুকের মাধ্যমে কুমিল্লার ফজলে রাব্বী নামে একজনের সঙ্গে যোগাযোগ হয় তার। ফজলে রাব্বী নিজেকে জেএমবির (সারোয়ার-তামিম গ্রুপের) সদস্য হিসেবে পরিচয় দেন। পরবর্তীতে তাদের মধ্যে মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে যোগাযোগ হয়।

পরবর্তীতে মিলনকে ২০১৬ সালের জুলাই মাসে নিউ জেএমবির অন্যতম নেতা আব্দুর রহমানের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন ফজলে রাব্বী। আব্দুর রহমান বিভিন্ন সময় মিলনের মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় অর্থ পাঠাতেন।

খাদেমুল ইসলামকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে ৠাবের ওই কর্মকর্তা জানান, সে ১৯৯৫ সালে ফায়দাবাদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে পঞ্চম শ্রেণি পাশ করে। পারিবারিক আর্থিক সংকটের কারণে তার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সে ফকিরাপুল পানির ট্যাঙ্কি এলাকায় ব্যাগ তৈরির কারখানাসহ বিভিন্ন কাজ করেন। তার ছোট ভাই নাজমুল ২০১৩ সালে আজমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পার্শ্বে আজমপুর ছাপড়া মসজিদে জুম্মার নামাজের পর দেখতে পায়, কিছু লোক ল্যাপটপের মাধ্যমে মাওলানা জসীম উদ্দিন রহমানীর ওয়াজ শুনছে। তখন নাজমুল ওই ওয়াজ মোবাইলের মেমরি কার্ডে লোড করে খাদেমুলকে শুনায়। তখন থেকেই খাদেমুল ইসলামি জিহাদের প্রতি অনুপ্রাণিত হয়।

২০১৬ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে টঙ্গী আহলে হাদীস মসজিদে নামাজ পড়ার সময় তার ছোট ভাই নাজমুলের সাথে তাজুল ইসলামের পরিচয় হয়। তাজুল এবং নাজমুল এই মসজিদে নামাজ পড়তো। তাজুল নামাজের পর নাজমুলকে নিয়ে ইসলামের বিভিন্ন দিক আলোচনা করত এবং নাজমুলকে জিহাদি বিভিন্ন ভিডিও দেখাতো। ভিডিও দেখে নাজমুল খাদেমুলকে জেএমবি (সারোয়ার-তামিম গ্রুপ) সম্পর্কিত বিভিন্ন কথাবার্তা বলে। এভাবে চলতি বছর ২০১৬ সালের মার্চ মাসে জেএমবির (সারোয়ার-তামিম গ্রুপের) প্রচার ও প্রসার নিয়ে দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনার জড়িয়ে পড়ে খাদেমুল।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৬
পিএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।