ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘দোকান পোড়েনি কপাল পুড়েছে’

রীনা আকতার তুলি, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০১৭
‘দোকান পোড়েনি কপাল পুড়েছে’ ক্ষতিগ্রস্ত দোকানের দিকে তাকিয়ে হতাশাগ্রস্ত ব্যবসায়ী

ডিএনসিসি মার্কেট ঘুরে: পুড়ে যাওয়া দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন শাহ-আলম। জীবনের শেষ সম্বল হারিয়ে পরিবার নিয়ে শঙ্কায় জীবন কাটছে তার। হাতে কোনো পুঁজি নেই, কীভাবে সাজাবেন পুড়ে যাওয়া দোকান। ডেকোরেশনেই লাগবে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা।

শুক্রবার (০৬ জানুয়ারি) বেলা ১২টায় চোখের জল মুছতে মুছতে একদমে কথাগুলো বলে থমকে থাকেন কিছুক্ষণ। আবার বলেন, ‘আমার দোকান পোড়েনি কপাল পুড়েছে’।


 
রাজধানীর গুলশান-১ নম্বরে ডিএনসিসি পাকা মার্কেটের পুড়ে যাওয়া দু’টি দোকানের মালিক শাহ-আলম। দোতলায় রুপা গ্যালারি নামে দু’টি দোকান ছিলো তার। যেখানে সাজানো ছিলো শিশুদের স্কুলব্যাগ, খেলনা, অন্যান্য পোশাকসহ শিশুদের বিভিন্ন পণ্য।
 
গত সোমবার (০২ জানুয়ারি) রাতে আগুন লেগে তার দোকান দু’টিও সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। মুহূর্তেই হয়ে যান নিঃস্ব।
 
শাহ-আলম তার সব হারানোর ব্যথা তুলে ধরে বলেন, জানুয়ারি মাস ছিল ব্যবসার মৌসুম। কিন্তু এ সময়ে আগুন লেগে সব শেষ হয়ে গেলো। ব্যবসা হওয়া তো দূরের কথা, পরিবার নিয়ে এখন শঙ্কায় জীবন কাটছে। ব্যবসা দাঁড় করাতে না পারলে এখন গ্রামেই ফিরে যেতে হবে।

তিনি আরো বলেন, গ্রামের সব বিক্রি করে এ ব্যবসা দাঁড় করিয়েছিলেন। আগুনে অবশিষ্ট আর কিছু নেই। ব্যবসা শুরু করতে চাইলে এখন কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা দরকার। এ সময় ব্যবসা করার জন্য তিনি সরকারের কাছে অফেরতযোগ্য অনুদানের দাবি জানান।  

পুড়ে যাওয়া মার্কেটে বেডিংয়ের ব্যবসা করতেন জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘আপা লিখে কি হবে। আমাদের তো কেউ সহযোগিতা করছে না। আমাদের সব শেষ। আমরা পথের ভিখারি হয়ে গেছি। ’ 

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের সবারই তো পরিবার আছে। বাচ্চারা স্কুলে যায়। প্রতিদিন চুলা জ্বালাতে হয়। চুলা তো বন্ধ রাখা যায় না। পেট তো বিপদ-আপদ বোঝে না। ’

শাহ-আলম ও জাহাঙ্গীরসহ অন্য ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের গাফিলতির কারণে আগুন বেড়ে যায়। ব্যবসায়ীদের দাবি, অর্থ সহায়তা পেলে আবার তারা ব্যবসা শুরু করবেন।

সরেজমিনে ডিএনসিসি মার্কেটে দেখা যায়, কাঁচামালের মার্কেট থেকে এখনো ধোঁয়া বের হচ্ছে। এছাড়া ডিএনসিসির দোতলা মার্কের সামনের গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। মার্কেটের পুড়ে যাওয়া দোকানের মালামাল সরিয়ে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।  

ডিএনসিসি’র দোতলা মার্কেটটির ধোঁয়া দূর করতে পানি দিচ্ছিলেন গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার রফিকউজ্জামন।  

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, কাঁচা বাজারের ওই মার্কেটে অনেক দোকানে দাহ্য পদার্থ থাকায় এখনো ধোঁয়া বের হচ্ছে। আমরা ধোঁয়া নিবারণের কাজ করছি।

এদিকে অগ্নিকাণ্ডের পর ক্ষতিগ্রস্ত পাকা মার্কেটের একাংশ শুক্রবার দুপুরের পর শুরু হয়েছে।  

**গুলশানে ডিএনসিসি মার্কেট আংশিক চালু

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০১৭
আরএটি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।