ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঈশ্বরদী-পাবনা ট্রায়াল ট্রেন চালু বৃহস্পতিবার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৭
ঈশ্বরদী-পাবনা ট্রায়াল ট্রেন চালু বৃহস্পতিবার ঈশ্বরদী-পাবনা রেলপথ। ছবি: বাংলানিউজ

ঈশ্বরদী (পাবনা): পূরণ হতে চলেছে পাবনাবাসীর শত বছরের স্বপ্ন ও দাবি। নতুন বছরের শুরুতেই নতুন রেলপথে প্রিয় বাহন ট্রেনে পা পড়বে তাদের।  

বহুল প্রতীক্ষিত ঈশ্বরদী-ঢালারচর রেলপথের পাবনা পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার রেললাইনে প্রথম ধাপে ট্রেন চলবে। মোট ৭৮ কিলোমিটার নতুন রেলরুটের বাকি ৫৩ কিলোমিটারের নির্মাণ দ্বিতীয় ধাপে শেষ হবে আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে।


 

বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে ঈশ্বরদী-পাবনা রুটে ট্রায়াল ট্রেন ও ভারী মালবাহী গাড়ি চালু হচ্ছে বলে মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। পরীক্ষামূলক রেল চলাচলের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

ঈশ্বরদী-ঢালারচর রেললাইনের বাকি অংশের কাজও দ্রুতগতিতে চলছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক সবুক্তগীন।

রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, ঈশ্বরদী থেকে পাবনা পর্যন্ত নবনির্মিত রেললাইনে ট্রেন যাত্রা শুরুর দিনক্ষণ এখনো নির্ধারিত হয়নি। তবে নতুন বছরের জানুয়ারি মাসে এর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০১৩ সালের ০২ ফেব্রুয়ারি পাবনা সরকারি অ্যাডওয়ার্ড কলেজ মাঠের জনসভায় এ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের কাজেরও উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের ম্যানেজার (ডিআরএম) অসিম কুমার তালুকদার জানিয়েছেন, রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সময় চাওয়া হয়েছে। তিনি সময় দিলেই উদ্বোধনের দিন নির্ধারিত হবে। নতুন বছরের শুরুতেই উদ্বোধনের প্রাথমিক প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে।

নতুন রেলপথ চালুর ঘোষণায় এ অঞ্চলের মানুষের মাঝে এখন উৎসবের আনন্দ। দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হতে চলায় বর্তমান সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছেন তারা।

দাশুড়িয়া নতুন রেলস্টেশন এলাকার আব্দুর রশিদ বলেন, শেখ হাসিনার মতো সাহসী ও দৃঢ়চেতা প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বলেই পাবনার মানুষ শত বছরের লালন করা স্বপ্নের ট্রেনে চলাচলের সুযোগ পেতে যাচ্ছেন।

১৯১৪ সালে পদ্মানদীতে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ চালু হলে সে সময়েই ঈশ্বরদী থেকে পাবনা পর্যন্ত লিংক রোড রেললাইনের দাবি ওঠে। ব্রিটিশ শাসকরা এ দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে বাস্তবায়িত হয়নি।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধুর সরকার ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে নগরবাড়ী পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু করে। সে সময় জমিও অধিগ্রহণ করা হয়। কিন্তু ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যার পর প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যায়।

২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে পাবনা শহরের টাউন হল মুক্তমঞ্চ মাঠে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা পাবনার মানুষকে প্রতিশ্রুতি দেন যে, আগামীতে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে এ রেলালাইন নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

২০১০ সালে নকশার কিছুটা পরিবর্তন এনে রেলপথটি ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে বেড়া উপজেলার ঢালারচর পর্যন্ত নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় আওয়ামী লীগ সরকার। ওই বছরের ০৫ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে ৯৮২ কোটি ৮৬ লাখ ৫৬ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। পরে ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২১ ঘণ্টা,  ডিসেম্বর ১৩, ২০১৭
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।