ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রাতের ঝলমলে আলোয় দ্যূতি ছড়াচ্ছে ‘বিজয়ের রঙ’

শরীফ সুমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৭
রাতের ঝলমলে আলোয় দ্যূতি ছড়াচ্ছে ‘বিজয়ের রঙ’ চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জায় নগর ভবন/ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: ১৬ ডিসেম্বর, বাংলাদেশের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় একটি দিন। ১৯৭১ সালের এ দিনেই বিশ্ব মানচিত্রে জন্ম নিয়েছিল ‘বাংলাদেশ’ নামের স্বাধীন ও সার্বভৌম একটি রাষ্ট্র। আজকের এ মাহেন্দ্রক্ষণেই হানাদাররা মুক্তিকামী বাঙালির কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল। বিজয়ের দলিলে সই করেছিল ইতিহাসের এ দিনেই। তাইতো দিনটি জুড়েই চলছে উৎসবের ঘনঘটা। দিনের জাঁকজমক আয়োজন শেষে রাতের ঝলমলে আলোয় সেজেছে পদ্মাপাড়ের রাজশাহী।

শহরের সব সরকারি ও আধাসরকারিসহ বেসরকারি স্থাপনায় এখন দ্যূতি ছড়াচ্ছে বিজয়ের লাল-সবুজ রঙ। বর্ণিল এ চাকচিক্য যে কারোরই চোখে পড়ার মতো।

জোনাকির মতো ছোট্ট-ছোট্ট বাতিগুলো জ্বলছে আর নিভছে। কোথাও কোথাও জ্বলে থাকছে নিরবেই। পথে পথে উড়ছে সারি সারি বিজয় কেতন। এ যেনো অন্য এক নগর, ভিন্ন এক উৎসব।

রাজশাহীর বিভিন্ন স্থানের মধ্যে আলোর সুপ্ত ধারায় মেতেছে নগর ভবনও। ভবনের প্রতিটি দেয়ালেই এখন লাল সবুজের রঙের ছাপ। শুধু লাল আর সবুজই নয়, উৎসবের আলোয় যোগ হয়েছে সাদা, নীল ও হলুদ রঙয়ের বাতিও।
নগরীজুড়ে চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জা/ছবি: বাংলানিউজসন্ধ্যায় মূল ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে লাইটিং দেখছিলেন জাহিদুল ইসলাম। তিনি বাংলানিউজকে বললেন, ‘নগর ভবন এলাকায় ফ্রি ওয়াই-ফাই থাকায় প্রতিদিন এখানেই আড্ডা দিকে আসেন তার মতো অনেক তরুণ। কিন্তু আজ অন্যরকম লাগছে। তাই দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন। কয়েকটা সেলফিও নিয়েছেন। বাড়িতে গিয়ে অন্যদের দেখাবেন’।

তবে কেবল জাহিদুলই নন। শহরজুড়ে এমন অসংখ্য মানুষ সন্ধ্যার পর বেরিয়ে পড়েছেন বিজয়ের রঙিন আলোয় নিজেকে ভাসিয়ে নির্মল আনন্দ উপভোগের জন্য। বিজয় দিবসকে ঘিরে এখন উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেছেন নগরবাসী। কেবল শহরেই নয়, গ্রাম থেকেও পরিবার-পরিজন ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে অনেকেই এসেছেন ঝলমলে রাজশাহী দেখার জন্য।

রাজশাহীর শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান চত্বরে বেড়াতে আসা তরুণ ইমরান হোসেন বলেন, ‘আজ বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন’। যুদ্ধ না দেখলেও যুদ্ধের গল্প শুনেছি। পরাধীনতার হাত থেকে মুক্তির যে, কী স্বাদ এ আনন্দ-উৎসবের মধ্যেই তার অনুভূতি মিলছে। যে কারণে তানোর থেকে শহর ঘুরতে এসেছি’।
ঝলমলে আলোয় সেজেছে পদ্মাপাড়ের রাজশাহী/ছবি: বাংলানিউজস্বাধীনতার ৪৬ বছর পূর্তিতে বিজয়ের আলোয় নিজেদের ভাসিয়ে বাঙালির শৃঙ্খলমুক্ত হওয়ার দিনটি এভাবেই প্রাণভরে উদযাপন করছেন সবাই। গৌরব আর অহংকারের এ দিনে বিজয়ের আলোয় তাই আলোকিত হয়ে ওঠেছে রাতের রাজশাহী। নগরীজুড়ে চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জা করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা থেকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় আলোকসজ্জিত করা হয়েছে। বর্ণিল সাজে সেজেছে প্রধান সড়কের মোহনাগুলোও।

এরই মধ্যে রাজশাহীতে জেঁকে বসেছে শীত। তবে পৌষের এ কনকনে শীত উপক্ষো করেই মোটরসাইকেল, রিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে ঘুরে ঘুরে রঙিন আলোকসজ্জা দেখে বেড়াচ্ছেন। এ যেনো অন্যরকম পুলক।
ঝলমলে আলোয় সেজেছে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন/ছবি: বাংলানিউজরাজশাহী শহর ঘুরে দেখা গেছে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চারিদিকেই যেন লাল-সবুজের আলোর বন্যা বইছে। রাজশাহীর শহীদ কামারুজ্জামান চত্বর ও নগর ভবন ছাড়াও রেলভবন, রেলওয়ে স্টেশন, চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজের ভবন, রাজশাহী কলেজ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, নিউ গভঃ ডিগ্রি কলেজ, বিদ্যুৎ ভবনসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ভবনে আলোকসজ্জা শোভা পাচ্ছে। রাতের নগরী সেজেছে মোহনীয় সাজে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৭
এসএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।