ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিজয় দিবসে সম্মাননা পেলেন ভিনদেশি লুসি 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৭
বিজয় দিবসে সম্মাননা পেলেন ভিনদেশি লুসি  সম্মাননা গ্রহণ করছেন লুসি হল্ট। ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: ভিনদেশি হয়েও বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে জনমত গড়ার চেষ্টা করেন বৃটিশ নাগরিক লুসি হেলেন ফ্রান্সসিস হল্ট। ১৯৭১ সালে চিঠি লিখে যুদ্ধের ভয়াবহতার চিত্র বিদেশে জানিয়েছিলেন তিনি। 

তার এ কাজের স্বীকৃতি কাগজে কলমে কোথাও লিপিবদ্ধ না থাকলেও ৪৭ তম মহান বিজয় দিবসের দিনে তাকে সম্মাননা জানিয়েছে বরিশাল মহানগর পুলিশ (বিএমপি)।

শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেলে বরিশাল শহরের চাঁদমারীর পুলিশ অফিসার্স মেসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়।

 

সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএমপি কমিশনার এস এম রুহুল আমিন। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা মাহাবুব উদ্দিন বীরবিক্রমসহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধা ও বিএমপি এবং জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

লুসি হল্ট ছাড়াও খেতাবপ্রাপ্ত ৩৯ জন, যুদ্ধাহত ও মুক্তিযোদ্ধা পুলিশ সদস্যদের হাতেও ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়। সম্মাননায় বেশ উৎফুল্ল লুসি হল্ট।  

তিনি বলেন, কোনো দিন ভাবিনি আমি এ সম্মাননা পাবো। আমি বাংলাদেশকে ভালোবাসি। আর ভালোবাসি বলেই এখানে বসবাস করি।  

সম্মাননা অনুষ্ঠানে লুসি হল্ট।  ছবি: বাংলানিউজইংল্যান্ডের নাগরিক লুসি হল্ট ষাটের দশকে কাজ করতে এ দেশে আসেন। পরবর্তীতে ভালোবেসে থেকে যান শস্য-শ্যামলা রূপময় বাংলাদেশে।  

বর্তমানে অশীতিপর লুসির শেষ ইচ্ছা বাংলার মাটিতেই চিরনিদ্রায় শায়িত হবার। ১৯৩০ সালে জন্ম নেওয়া লুসির বর্তমান বয়স ৮৮ বছর। এখন বরিশালে বসবাস করেন তিনি।  

জানা যায়, ১৯৭১ সালে যশোরের ফাতেমা হাসপাতালে বেসমারিক যুদ্ধাহত মানুষকে চিকিৎসা সেবা দেন। মানব কল্যাণে কাজ করেছেন দেশের অন্যান্য এলাকাতেও।  

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাক হানাদারদের নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে স্বাধীনতার পক্ষে বিদেশিদের সমর্থন চেয়েছিলেন লুসি। ১৯৭১ এর ২ মে নির্যাতনের বর্ণনা করে নিজ দেশ ইংল্যান্ডে চিঠিও পাঠান তিনি।  

চিঠিতে তিনি বাঙালির স্বাধীনতার স্পৃহা ও বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে কথা উল্লেখ করেন। বঙ্গবন্ধুর প্রেরণায় তার স্ত্রী অর্থাৎ বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসার অবদানের কথাও লিখেন ওই চিঠিতে। এ জন্য যুদ্ধের পর ফজিলাতুন্নেসা মুজিবকে উপহারও পাঠিয়েছিলেন লুসি।
 
জবাবে ১৯৭৩ সালের ২০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানার সই করা একটি চিঠি পান লুসি। সে চিঠিতে লুসিকে ধন্যবাদ জানান শেখ রেহানা।

তবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট দুই কন্যা ছাড়া সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করায় আর যোগাযোগ হয়নি লুসির। কিন্তু স্মৃতি হিসেবে ধরে রেখেছেন চিঠি।

বাংলাদেশ সময়: ২১১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৭
এমএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।