ঢাকা, সোমবার, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

প্রতিরক্ষা বাহিনী প্রধানদের নিয়ে সংসদে বিল উত্থাপন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০১৮
প্রতিরক্ষা বাহিনী প্রধানদের নিয়ে সংসদে বিল উত্থাপন

সংসদ ভবন থেকে: অবসরে যাওয়া প্রতিরক্ষা বাহিনী (সেনা, নৌ ও বিমান) প্রধান সাংবিধানিক পদে নিয়োগ পেতে পারেন- এমন বিধান রেখে সংসদে একটি বিল উত্থাপন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (০৯ জানুয়ারি) রাতে প্রতিরক্ষা বাহিনীসমূহের প্রধানদের (নিয়োগ, বেতন, ভাতা এবং অন্যান্য সুবিধাদি) আইন ২০১৮ নামে বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন সংসদকার্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

পরে বিলটি পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে রিপোর্ট দিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

উত্থাপিত বিধানটিতে বলা হয়েছে, আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইন দ্বারা বাধা আরোপিত না হইয়া থাকিলে অবসরপ্রাপ্ত কোনো বাহিনী প্রধান সাংবিধানিক কোনো পদে নিয়োগ লাভের জন্য অযোগ্য বলে গণ্য হবেন না।

বিলে বলা হয়েছে, উপ-ধারা ৯৩ এর বিধান সাপেক্ষে বাহিনী প্রধানের নিয়োগের মেয়াদ হইবে একসঙ্গে বা বর্ধিতকরণসহ নিয়োগ দেওয়ার তারিখ হতে অনূর্ধ্ব চার বছর। এছাড়া বিলে প্রতি মাসে বাহিনী প্রধানের বেতন ৮৬ হাজার টাকা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বাহিনী প্রধানদের পুন:নিয়োগ প্রসঙ্গে বিলে বলা হয়েছে- বাহিনী প্রধান অবসরপ্রাপ্ত হওয়া বা স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করার পর প্রজাতন্ত্রের কর্মে কোনো সামরিক বা বেসামরিক পদে পুন:নিয়োগ লাভে অযোগ্য হবেন।

এ বিষয়ে শর্ত উল্লেখ করে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি জনস্বার্থে আবশ্যক মনে করলে অবসরপ্রাপ্ত কোনো বাহিনী প্রধানকে চুক্তি ভিত্তিক প্রজাতন্ত্রের কর্মে বা কোনো বেসামরিক পদে নিয়োগ দিতে পারবেন।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, সংবিধানের ৬২ অনুচ্ছেদ এর বিধানমতে, সংসদ আইন প্রণয়নের মাধ্যমে প্রতিরক্ষা বাহিনীসমূহের প্রধানদের নিয়োগদান ও তাদের বেতন-ভাতাদি র্নিধারণ করার বিধান থাকলেও দীর্ঘদিন অতিক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও প্রতিরক্ষা বাহিনী সমূহের প্রধানদের নিয়োগ ও বেতন-ভাতাদি সম্পর্কিত কোনো আইন প্রণয়ন করা হয়নি।

বিলে বলা হয়েছে, বর্তমানে প্রতিরক্ষা বাহিনীসমূহের প্রধানদের নিয়োগ ও বেতন-ভাতাদিও বিষয়টি সংবিধানের নির্দেশনার আলোকে স্বতন্ত্রভাবে না হয়ে বর্তমানে যৌথ বাহিনী নির্দেশনাবলী নামীয় ইন্সট্রুমেন্ট দ্বারা অন্যান্য সব সামরিক কর্মচারির সঙ্গে একীভূতভাবেই হচ্ছে। এ ধরনের যৌথ বাহিনী নির্দেশনাবলীর পাঠোদ্ধার খুব কষ্টসাধ্য।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে সংসদ কর্তৃক আইন প্রণয়ন করে বাহিনী প্রধানদের নিয়োগ এবং বেতন-ভাতাদি সম্পর্কিত একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ আইন করা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে বাহিনী প্রধানরা চাকরিকালীন যে সব আর্থিক সুবিধাদি প্রাপ্য হন, কোনো রকম পরিবর্তন ছাড়া, তাদের হুবহু অন্তর্ভূক্ত করে আইনের একটি প্রাথমিক খসড়া প্রস্তুত করা হয়।

এতে বলা হয়েছে, খসড়াটির বিষয়ে প্রতিরক্ষা বাহিনীসমূহের, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, অর্থ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, আইন ও বিচার বিভাগ এবং কন্ট্রোলার জেনারেল অব ডিফেন্স ফাইন্যান্সের মতামত গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর আইন, বিধি, বিধান, নির্দেশনাবলি ও আদেশসমূহ সংশোধন/রহিতকরণ নতুনভাবে প্রণয়নপূর্বক যুগোপযোগী ও হালনাগাদ করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সুপারিশ দেওয়ার জন্য গঠিত আন্ত:মন্ত্রণালয় কমিটির একাধিক সভায় খসড়াটি চূড়ান্ত করা হয়।

প্রস্তাবিত খসড়াটি আইনে রূপান্তরিত হলে প্রতিরক্ষা বাহিনীসমূহের প্রধান পদে (নিয়োগদান ও মেয়াদ) আদেশ, ২০১৬ সম্পূর্ণ রহিত হবে এবং যৌথ বাহিনী নির্দেশনাবলী ১/২০১৬ আংশিক অকার্যকর হবে। এতে আরও বলা হয়েছে, বিলের খসড়া, ভেটিং সাপেক্ষে, মন্ত্রিসভা কর্তৃক চূড়ান্তভাবে অনুমোদনের পর লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের ভেটিং গ্রহণ করা হয়েছে। বিলটিতে সরকারি অর্থ ব্যয়ের প্রশ্ন জড়িত থাকায় সংবিধানের ৮২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির সুপারিশ গ্রহণ করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৮
এসএম/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।