ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

প্রতিবন্ধকতা ঠেলে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ইমরান

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৮
প্রতিবন্ধকতা ঠেলে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ইমরান প্রতিবন্ধী শিশু ইমরান বাম হাত দিয়ে লেখছে

খাগড়াছড়ি: জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী। ডান হাতের কনুই পর্যন্ত নেই। বাম হাতে লেখে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় প্রায় আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থীকে পেছনে ফেলে মেধা তালিকায় তৃতীয় স্থান অজর্ন করেছে খাগড়াছড়ির দীঘিনালার ১৩ বছরের শিশু ইমরান। অদম্য ইচ্ছা শক্তি আর মেধা দিয়ে প্রতিবন্ধকতাকে ঠেলে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে সে।

একদিকে দারিদ্রতা অন্যদিকে প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নেয়ায় স্ত্রী সন্তানকে রেখে নিরুদ্দেশ হয়ে যান ইমরানের বাবা এরশাদ আলী। এছাড়া প্রাক প্রাথমিকে ভর্তি করে নানির কাছে ইমরানকে রেখে কাজের সন্ধানে চট্টগ্রাম চলে যান তার মা পারভিন বেগম।

এরপর থেকে নানি ও মামাদের কাছে থেকেই বড় হচ্ছে ইমরান। সে এবার দীঘিনালার মানিকছড়ি হেডম্যান পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সমাপনীতে পাস করেছে। তার এ অর্জন গ্রামের অন্যান্য শিশুদের অনুপ্রাণিত করছে বলে স্থানীয়দের মত।
 
দীঘিনালা মানিকছড়ি হেডম্যান পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ঝর্ণা চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ‘ইমরান শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত আমাদের বিদ্যালয় থেকেই পড়াশোনা করেছে। প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে তাকে পড়াশোনায় বিশেষ সুবিধা দিতে চাইলেও সে তা গ্রহণ করেনি। তার অদম্য ইচ্ছা শক্তিই তাকে এগিয়ে নিচ্ছে। 'প্রতিবন্ধী শিশু ইমরান তার নানির সঙ্গেইমরানের নানি মোছাম্মদ আছিয়া বেগম বাংলানিউজকে বলেন, অন্যের ঘরে কাজ করে যা পাই, ‘তা দিয়ে সংসার আর ইমরানের পড়াশোনার খরচ চালাই। কিন্তু এখন আমার জন্য ইমরানের পড়াশোনার খরচ চালানো কঠিন হয়ে গেছে। যদি তার জন্য একটু সহযোগিতা পাই, তাহলে আমাদের অনেক উপকার হবে। '
 
প্রতিবেশী গুলজার হোসেন ও আতিকুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ইমরান মেধাবী শিশু। আমরা সবাই মিলে তাকে যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করছি। যদি সরকারিভাবে সে একটু সহযোগিতা পেত তাহলে তার স্বপ্ন পূরণ হতো।
 
ইমরান বর্তমানে দীঘিনালার হাছিনছনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ট শ্রেণির ছাত্র। মেধাবী শিশু ইমরানকে সব ধরনের সহযোগিতা করার কথা জানিয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

হাছিনছনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবপ্রিয় বড়ুয়া বাংলানিউজকে বলেন, মেধাবী ইমরান প্রতিবন্ধী হওয়ায় বিদ্যালয় থেকে যতটুকু সম্ভব আমরা তাকে সহযোগিতা করবো।

ইমরান বাংলানিউজকে বলে, ‘আমি বড় হয়ে সরকারি কর্মকর্তা হতে চাই। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন, আমি যেনো এগিয়ে যেতে পারি।

এসময় সে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য সবার সহযোগিতা প্রার্থনা করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৮
টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।