ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অনশনে অসুস্থ ১৭৮ শিক্ষক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৮
অনশনে অসুস্থ ১৭৮ শিক্ষক অসুস্থ হলেও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন

ঢাকা: তীব্র শীত ও টানা সপ্তম দিনের আমরণ অনশন কর্মসূচির কারণে ১৭৮ জন ইবতেদায়ি শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের অনশন কর্মসূচিস্থলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

সোমবার (১৫ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়করণে দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।

বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির ব্যানারে গত ১৫ দিন ধরে অবস্থান ও সাতদিন ধরে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা।

প্রেসক্লাবের সামনে অনশন কর্মসূচি এলাকায় দেখা যায়, উন্মুক্ত রাস্তায় অসুস্থ শিক্ষকরা কম্বল গায়ে দিয়ে শুয়ে আছেন। দিন রাত প্রচণ্ড শীতের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে তারা শুয়ে থাকায় ও টানা সাতদিন ধরে অনশনের কারণে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। উপস্থিত স্বেচ্ছাসেবক চিকিৎসকরা স্যালাইনসহ প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছেন। এর মধ্যে যারা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ছেন তাদের ভ্যান কিংবা রিকশায় করে ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।

আয়োজক সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব আবু মুসা ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, ১৫ দিন এ শীতে রাস্তায় ও সাতদিন ধরে না খেয়ে শিক্ষকরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এ অবস্থা আরও কয়েকদিন চলতে থাকলে শিক্ষরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়বেন।

তিনি বলেন, আমরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়লেও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কোনোভাবেই দাবি থেকে সরে আসবো না। আমাদের এতো কষ্ট এবং অসহায়ত্ব দেখেও যদি সরকারের সিদ্ধান্ত না বদলায় তাহলে আমরা রাস্তায় না খেয়ে মরে যাবো। তারপরেও আমরা দাবি আদায় ছাড়া অনশন কর্মসূচি থেকে সরে আসবো না।

অনশনরত শিক্ষদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আন্দোলনকারী শিক্ষকরা রোববার শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসেন। এ সময় শিক্ষামন্ত্রীর তাদের বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়ে ফিরে যেতে বলেন। কিন্তু সুস্পষ্ট ষোষণা ছাড়া আন্দোলন থেকে সরে আসবেন না বলে জানান শিক্ষকরা।

বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. রুহুল  আমিন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা সবাই শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি। প্রায় সবার শীতজনিত বিভিন্ন রোগ দেখা দিচ্ছে। এছাড়া খাওয়া-দাওয়া না থাকার কারণে আরো দুর্বল হয়ে গেছি, যার কারণে অনেকের স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে।

তবে আমরা সরকার ও শিক্ষামন্ত্রীকে জানিয়ে দিতে চাই, জাতীয়করণের ঘোষণা ছাড়া আমরা আন্দোলন প্রত্যাহার করবো না। এতে আমরা যত অসুস্থ হই না কেন।

মাদ্রাসা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ১০ হাজারের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা নিবন্ধিত আছে। এতে শিক্ষকের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার। এর মধ্যে মাত্র এক হাজার ৫১৯টি ইবতেদায়ি মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক দুই হাজার ৫০০ টাকা ও সহকারী শিক্ষকরা দুই হাজার ৩০০ টাকা ভাতা পান। বাকি শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে বিনা বেতনে চাকরি করছেন।

এর আগে গত ১ জানুয়ারি থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ইবতেদায়ি শিক্ষকরা প্রেসক্লাবের সামনে থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন। এতে সরকারের কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে ৯ জানুয়ারি থেকে আমরণ অনশন শুরু করেন শিক্ষরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৮
এমএসি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।