ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রিমোট কন্ট্রোল প্লেন বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিলো আরমানুল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৮
রিমোট কন্ট্রোল প্লেন বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিলো আরমানুল রিমোট কন্ট্রোল প্লেন হাতে আরমানুল

গোপালগঞ্জ: রিমোট কন্ট্রোল প্লেন বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে আরমানুল ইসলাম নামে গোপালগঞ্জের এক কিশোর। সম্প্রতি প্লেনটি পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন করা হয়। এখন শুধু প্লেন নয়, তাকেও দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন হাজারো মানুষ।

আরমানুলের বর্ণনায়, তার আবিষ্কৃত ছোট্ট প্লেনটির ওজন ৮০০ গ্রাম, দৈর্ঘ্য ৩৬ ইঞ্চি ও উইং ৫০ ইঞ্চি। প্লেনটিতে ব্র্যাস লেস ডিসি মটর ব্যবহার করা হয়েছে।

মটরের স্পিড নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আরো ৪টি ইলেকট্রিক সারভো মটর যোগ করা হয়। প্লেনটিতে সিক্স চ্যানেলের একটি রিমোট সংযোজন করা হয়েছে। প্লেনটি দেড় কিলোমিটার রেঞ্জ পর্যন্ত চলতে পারবে। তবে প্রযুক্তি ব্যবহার করলে রেঞ্জ আরো বাড়ানো সম্ভব বলে সে উল্লেখ করে। রিমোট নিয়ন্ত্রিত প্লেন বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিলো আরমানুলআরমানুল গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার পুইশুর ইউনিয়নের  মো. হাফিজুর রহমান সমাদ্দারের একমাত্র ছেলে। সে একই উপজেলার রামদিয়া এসকে কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হয়েও আরমানুল পড়াশোনার পাশাপাশি উদ্ভাবনী কাজ করছে। যা সত্যিই প্রশংসার বলে জানালেন তার কলেজেরে অধ্যক্ষসহ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরমানুলের এ আবিষ্কার দেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।

নবম শ্রেণিতে পড়াকালীন সে একটি প্লেন বানাবে বলে চিন্তা করে। কিন্তু অর্থাভাবে সেসময় এটা আর হয়ে ওঠেনি। পরে কলেজে ভর্তি হওয়ার পর তার প্রবল ইচ্ছার কারণে প্লেন বানানোর জন্য তাকে সাড়ে ১২ হাজার টাকা দেন তার বাবা, দাদি হাফিজা বেগম এবং তার সহযোগী জাসিয়া আকতারের বাবা দুবাই প্রবাসী এনামুল হক। রিমোট নিয়ন্ত্রিত প্লেন বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিলো আরমানুল২০১৭ সালের ডিসেম্বরের শেষ দিকে শুরু হয় তার প্লেন বানানোর কাজ। বানানো শেষে ৮ জানুয়ারি পরীক্ষামূলকভাবে প্লেনটি এসকে কলেজ মাঠে উড্ডয়ন করা হয়। প্রায় ১৫ মিনিট প্লেনটি আকাশে উড়ানোর পর অবতরণ করা হয়। এসময় বিপুল সংখ্যক মানুষ তার প্লেনটি দেখতে ভিড় করেন।

ক্ষুদে এই উদ্ভাবক আরমানুলের দাবি, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে চীন ও আমেরিকার মত উন্নত প্রযুক্তির মনুষ্যবিহীন প্লেন, ড্রোন ও যান বানাতে পারবে সে।

আরমানুলের সহযোগী জাসিয়া আকতার বাংলানিউজকে বলে, আরমানুল ভাইয়ের খুব শখ ছিলো একটা প্লেন বানাবে আর প্লেন আকাশে উড়বে। সে আমার সঙ্গে প্লেন বানানোর জন্য কি কি করতে হবে তা বলতো। তখন আমিও তার এ কাজে সহযোগিতা করার ইচ্ছা পোষণ করি। পরে তার সঙ্গে প্লেন বানাতে কাজ করি। রিমোট নিয়ন্ত্রিত প্লেন বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিলো আরমানুলআরমানুলের মা রেহানা পারভিন বাংলানিউজকে বলেন, ছোট বেলা থেকে সৃজনশীল কাজের প্রতি আরমানুলের অনেক মনোযোগ। এ কারণে স্কুলজীবনের বিভিন্ন বিজ্ঞান মেলায় সে অনেক কিছু উদ্ভাবন করেছে। তাতে পুরস্কারও পেয়েছে সে। অনেকদিন ধরে তার ইচ্ছা ছিল একটি প্লেন বানানোর। কিন্তু তার জন্য যে টাকার প্রয়োজন, তা দেওয়ার সামর্থ্য আমাদের ছিলো না। সম্পতি তার টাকা জোগাড় হওয়ায় দুই সপ্তাহ সময় নিয়ে সে প্লেনটি বানিয়েছে।

রামদিয়া এসকে কলেজের অধ্যক্ষ আবু বকর সিদ্দিক বাংলানিউজকে বলেন, আরমানুল মেধাবী ছেলে। সে একটি প্লেন বানিয়েছে। তার এ উদ্ভাবনে আমরা অভিভূত। এ উদ্ভাবন যাতে দেশের কাজে লাগে, সে জন্য সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার প্রয়োজন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৮
টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।