ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

উৎসবের দুর্গোৎসব শুরু সোমবার, থাকছে কড়া নিরাপত্তা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৮
উৎসবের দুর্গোৎসব শুরু সোমবার, থাকছে কড়া নিরাপত্তা শারদীয় দুর্গোৎসব। ফাইল ফটো

ঢাকা: বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হচ্ছে সোমবার। এদিন দেবী দুর্গার মূল পূজা শুরু হয়ে শুক্রবার (১৯ অক্টোবর) বিজয়া দশমী পর্যন্ত ঢাকের বাদ্যে মুখরিত থাকবে পূজা মণ্ডপগুলো।

পূজারি ও ভক্তরা উদ্বেলিত হবেন দেবী মহামায়ার অধিষ্ঠানে। সবাই শামিল হবে পৃথিবীর সব আসুরিক শক্তির বিরুদ্ধে বিজয় ও মানুষের কল্যাণ প্রতিষ্ঠার প্রার্থনায়।

পূজাকে আনন্দমুখর করে তুলতে দেশজুড়ে বর্ণাঢ্য প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। সারাদেশে এখন বইছে উৎসবের আমেজ। ঢাক-ঢোল কাঁসা এবং শঙ্খের আওয়াজে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিভিন্ন মণ্ডপ।

রামকৃষ্ণ মিশনের নির্ঘন্ট (সূচিপত্র) অনুযায়ী, সোমবার সকাল ৬টা ৩০মিনিটে কল্পারম্ভ এবং বোধন আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্যদিয়ে উৎসবের প্রথম দিন ষষ্ঠী পূজা সম্পন্ন হবে। এদিন সকাল থেকে চণ্ডিপাঠে মুখরিত থাকবে সব মণ্ডপ এলাকা।

উৎসবের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার মহাসপ্তমীর পূজা অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৬টায়। বুধবার মহাঅষ্টমীর পূজা আনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায় এবং ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে কুমারী পূজা। সন্ধিপূজা শুরু হবে দুপুর ১২টা ৫৬ মিনিটে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা ৩০মিনিটে শুরু হবে নবমী পূজা। পরদিন শুক্রবার সকাল ৭টায় পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন হবে সকাল ৮টায়। পরে প্রতিমা বিসর্জন ও শান্তিজল গ্রহণের মধ্যদিয়ে শেষ হবে পাঁচদিনব্যাপী এ উৎসব।

রামকৃষ্ণ মিশনের মৃদুল মহারাজ বলেন, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার ঘোটক (ঘোড়ায়) চড়ে কৈলাশ থেকে মর্ত্যালোকে (পৃথিবী) আসবেন। এতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, রোগ শোক হানাহানি মারামারি বাড়বে। অন্যদিকে কৈলাশে (স্বর্গে) বিদায় নেবেন দোলায় চড়ে। যার ফলে জগতে মরণব্যাধি এবং প্রাণহানির মত ঘটনা বাড়বে।

দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের প্রতিটি পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, আনসার, বিজিবি, র‌্যাবসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন।  

পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। ঢাকেশ্বরী মন্দির মেলাঙ্গনে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, শারদীয় দুর্গাপূজা জাতীয় বড় উৎসবগুলোর একটি। এবার পূজায় কোনো ধরনের শঙ্কা কিংবা নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। তবু সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এ উৎসবকে ঘিরে সমন্বিত ও সুদৃঢ় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এবার ঢাকা মহানগরীতে ২৩৪টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এরমধ্যে ৯টি সবচেয়ে বড় মণ্ডপ। এগুলো হলো-ঢাকেশ্বরী মন্দির, রামকৃষ্ণ মঠ, কলাবাগান পূজামণ্ডপ, বনানীর মণ্ডপ, সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির, রমনা কালী মন্দির, উত্তরা সার্বজনীন পূজামণ্ডপ, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট সমাজকল্যাণ সংঘ ও বসুন্ধরা সার্বজনীন পূজামণ্ডপ। এ নয়টি মণ্ডপসহ সব মণ্ডপেই কয়েক স্তরের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হবে।

এছাড়া, প্রত্যেকটি মণ্ডপ সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক মনিটর করা হবে, প্রবেশকালে আর্চওয়ের ভেতর দিয়ে দর্শনার্থীদের প্রবেশ করতে হবে। এসব মণ্ডপে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদাপোশাকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। দুর্গোৎসবকে ঘিরে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোল রুম বসানো হয়েছে। সেখান থেকে সার্বক্ষণিক ডিউটিতে থেকে পূজা কমিটির নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করে নিরাপত্তা বিধান করা হবে।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি বলেন, এবার সারা দেশে ৩১ হাজার ২৭২টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর রাজধানী ঢাকাতে এবার পূজা হচ্ছে ২৩৪টি মন্ডপে। গত বছর সারা দেশে ২৯ হাজার ৭৪টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং রাজধানী ঢাকায় মন্ডপের সংখ্যা ছিল ২২৫টি।

তিনি বলেন, পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা ইতোমধ্যেই পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। প্রশাসনের কর্মকর্তারা নির্বিঘ্নে শান্তিপূর্ণভাবে যাতে পূজা সম্পন্ন করা যায় সে বিষয়ে তারা পূর্ণ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০১৮
পিএম/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।