সোমবার (১৫ অক্টোবর) সকালে ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে এর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। মণ্ডপে মণ্ডপে উলুধ্বনি, শঙ্খ, ঘণ্টা আর ঢাকের বোলে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করা হয় দেবী দুর্গাকে।
মঙ্গলবার (১৬ অক্টোবর) হবে মহাসপ্তমী পূজা। ১৯ অক্টোবর (শুক্রবার) দেবীর প্রতীমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসব। পঞ্জিকা মতে, রোববার (১৪ অক্টোবর) পূর্বাহ্ন দুর্গা দেবীর শুক্লাপঞ্চমী বিহিত পূজা এবং সায়ংকালে (সন্ধ্যাবেলায়) দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এ প্রাণের উৎসবের সূচনা হয়। এখন মহানগরের মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে হিন্দু ধর্মানুরাগীদের ভজন, পূজন ও দেবী আরাধনা।
পঞ্জিকা মতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার ঘোড়ায় চড়ে মর্ত্যলোকে (পৃথিবী) এসেছেন। যার ফল হচ্ছে ফসল ও শস্যহানী।
আর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে ফিরবেন দোলায় (পালকি) চড়ে। যার ফল হচ্ছে মড়ক। অর্থাৎ পৃথিবীতে রোগশোক, মহামারীর আশঙ্কা বাড়বে।
সোমবার সকাল ৬টা ২৫ মিনিটে কল্পারম্ভ এবং বোধন আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে উৎসবের প্রথম দিনের সূচনা করা হয়। এদিন সকাল থেকে চণ্ডিপাঠে মুখরিত ছিল বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ এলাকা। মঙ্গলবার মহাসপ্তমী।
এদিন সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে দুর্গা দেবীর নবপত্রিকা প্রবেশ ও স্থাপন, সপ্তমাদি কল্পারম্ভ ও মহাসপ্তমী বিহিত পূজা অনুষ্ঠিত হবে। উৎসবের তৃতীয় দিন ১৭ অক্টোবর (বুধবার) মহাঅষ্টমী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এদিন সকাল ৯টায় এবং বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে কুমারী পূজা। সন্ধিপূজা শুরু হবে দুপুর ১২টা ৫৬ মিনিটে।
পরদিন বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টায় শুরু হবে নবমী পূজা। শুক্রবার (১৯ অক্টোবর) সকাল ৭টায় পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন হবে সকাল ৮টায়। পরে প্রতিমা বিসর্জন ও শান্তিজল গ্রহণের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসব।
মূলত মহাষষ্ঠী, মহাসপ্তমী, মহাষ্টমী এবং মহানবমীতেই পূজার মূল আকর্ষণ। কারণ এই তিনদিনই ভক্তরা মায়ের পায়ে পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে থাকেন। বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবীর বিদায়। এ সময় ভক্তকূলে হৃদয়ে বিদায়ের বিরহ ভর করবে।
এদিকে, হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধানতম ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। পূজাকে ঘিরে রাজশাহীতে শুরু হয়েছে উৎসবের আমেজ। আনন্দময়ী দেবী দুর্গার আগমনী গানে মুখরিত এখন চারদিক। মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে দেবী দর্শন ছাড়াও ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে অতিথি আপ্যায়ন। বাহারি পোশাকে আর অঙ্গসজ্জায় নিজেদের সাজিয়ে-রাঙিয়ে উৎসব-আনন্দে মেতে উঠেছে শিশু-কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীরা।
বাংলাদেশ হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি অনিল কুমার সরকার বাংলানিউজকে জানান, এবার রাজশাহীতে ৪৬০টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সোমবার ষষ্ঠীপূজার মধ্যে দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হলো। আগামী ১৯ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনে শেষ হবে পাঁচ দিনের উৎসব।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র সিনিয়র সহকারী কমিশনার (সদর) ইফতে খায়ের আলম বাংলানিউজকে জানান, প্রতি বছরের মতো এবারও শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপশি র্যাব সদস্যরাও বিভিন্ন মণ্ডপে টহল দিচ্ছেন। সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা যেন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উৎসব উদযাপন করতে পারেন সেজন্য এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৮
এসএস/আরবি/