ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আদালতের সঙ্গে প্রতারণা 

সিলেটে ছয় ভুয়া বাদী কারাগারে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৮
সিলেটে ছয় ভুয়া বাদী কারাগারে

সিলেট: ভুয়া বাদী সেজে আদালতের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দুই আইনজীবীকে ভৎর্সনা এবং শোকজ করেছেন বিচারক।

সোমবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে সিলেট যুগ্ম জেলা জজ দ্বিতীয় আদালতে এ ঘটনা ঘটে। অত্র আদালতের বিচারক সাজেদুল করিম ভুয়া ছয় বাদীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছেন।

একই সঙ্গে আইনজীবীদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন।  
 
গ্রেফতারকৃত মামলার ভুয়া বাদীরা হলেন- মিন্টু মুড়া, সুনীল মুড়া, রন্টু মুড়া, প্রশান্তি মুড়া, সবিতা বাগচি ও যমুনা মাহালি। জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত আইনজীবীরা বিবাদী অ্যাডভোকেট এনামুল হক ও সাইফুল হক। তাদেরকেও মামলায় আসামি করার নির্দেশ দেন বিচারক।  
 
মামলার প্রকৃত বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান শিপু বলেন, এ মামলার বাদী পক্ষের সিনিয়র আইনজীবী বেদানন্দ ভট্টাচার্য দেশের বাইরে রয়েছেন। সেই সুযোগে মামলার ধার্য তারিখে খাদিম চা বাগানের ছয় শ্রমিককে ভুয়া বাদী সাজিয়ে আদালতে আপোসনামা দাখিল করেন বিবাদী পক্ষের দুই আইনজীবী। এতে উল্লেখ করা হয়, বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে বাদী ও বিবাদী পক্ষ নিজেদের মধ্যে আপোস করে নিয়েছেন। কিন্তু জালিয়াতির বিষয়টি আদালতের নজরে আসার পর আসল বাদীদের আদালতে হাজির করে আবেদন করা হয়। এ সময় ছয় ভুয়া বাদীও আদালতে হাজির হন।  
 
আদালতে তারা স্বীকার করেন- একটি গোষ্ঠীর প্ররোচনায় অর্থের বিনিময়ে তারা এ মামলার ভুয়া বাদী সেজে আদালতে আসেন। এ সময় মামলার ভুয়া বাদী মিন্টু মুড়া, সুনীল মুড়া, রন্টু মুড়া, প্রশান্তি মুড়া, সবিতা বাগচি ও যমুনা মাহালি, অ্যাডভোকেট এনামুল হক ও সাইফুল হককে আসামি করে নিজে বাদী হয়ে মামলার সিদ্ধান্ত নেন বিচারক।  
 
আদালত সূত্র জানায়, সিলেটের খাদিম চা বাগানের বুড়িবস্তি এলাকার বাসিন্দা একটি চা শ্রমিক পরিবারের এক একর জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। বালুচর এলাকার ওই জমি রক্ষায় ২০১৪ সালে আদালতে মামলা করেন পরান মুড়া, কর্মী মুড়া, পদ্মাবতী মুড়া, রেবতি মুড়া ও সারদী মুড়া। স্থানীয় আবুল বশরের ছেলে অ্যাডভোকেট এনামুল হক ও সাইফুল হককে বিবাদী করে এ মামলা দায়ের করেন তারা।
 
সোমবার তাদের জালিয়াতির বিষয়টি আদালতে ধরা পড়ে। এ জালিয়াতির সঙ্গে আরও আইনজীবীরা যুক্ত থাকতে পারেন।  
 
আদালত অভিযুক্ত দু’জনের বিরুদ্ধে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে মৌখিকভাবে শোকজ করেন।
 
এ ব্যাপারে সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ লালা বলেন, কেউ আইনজীবীদের কাছে এসে বাদী বা বিবাদী পক্ষ দাবি করলে আইনজীবীদের অনেক ক্ষেত্রে তা যাচাই-বাছাইয়ের সুযোগ থাকে না। তারপরও আইনজীবীদের কেউ এ কাজে জড়িত কী না তা তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।  
 
বাংলাদেশ সময়: ২১২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৮
এনইউ/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।