সোমবার (১৫ অক্টোবর) রাজধানীর বনানী মাঠে গুলশান-বনানী সার্বজনীন পূজা ফাউন্ডেশনের আয়োজনে পাঁচ দিনব্যাপী ‘শারদীয় দুর্গোৎসব, ২০১৮’ উপলক্ষে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আবহমানকাল থেকে বাংলার প্রকৃতি বিভিন্ন রঙে রঙিন হয়েছে।
‘এ দেশের হিন্দু সম্প্রদায় বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে আবহমানকাল ধরে দুর্গাপূজা উদযাপন করে আসছে। এ উৎসব কেবল ধর্মীয় উৎসবই নয়, সামাজিক-সাংস্কৃতিক দিক থেকেও এর তাৎপর্য অপরিসীম। এটি এখন আর কেবল নির্দিষ্ট একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই মিলে আনন্দ-উৎসবে সামিল হওয়ার মাধ্যমে এটি সার্বজনীনতা লাভ করেছে। এটি হয়েছে আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সব সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতির সেতুবন্ধনকে সুদৃঢ় করার এক অনন্য সামাজিক উৎসব। ’
তিনি বলেন, দুর্গাপূজা মূলত বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান পূজা ও ধর্মীয় উৎসব। ‘মহাভারত’ থেকে জানা যায়, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে জয় ত্বরান্বিত করতে অর্জুনকে দেবী দুর্গার স্তব করতে উপদেশ দেন শ্রীকৃষ্ণ। এর মাধ্যমে এই পূজার তাৎপর্য ও গুরুত্ব সম্যক উপলদ্ধি করা যায়। নিজের অহমিকা ও পশুত্বকে বলি দেওয়ার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকাই এ পূজার মর্মকথা।
‘বাংলাদেশের শারদোৎসবে দিনদিন নতুন মাত্রা যুক্ত হচ্ছে। আয়োজনে বেড়েছে জাঁকজমকতা। পুজা-মণ্ডপের মধ্যে আবদ্ধ না থেকে আমাদের শান্তি-প্রিয় জনগণ সামাজিক উৎসব হিসেবে পালন করছে। জাতির অগ্রগতিতে এভাবে সবার ঐক্যবদ্ধ থাকা অত্যন্ত জরুরি। জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হয়ে দেশের প্রতিটি মানুষ সব বাধা পেরিয়ে একটি উন্নত সমাজ গঠনে এগিয়ে আসবে- এটাই সবার প্রত্যাশা’।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ধর্ম আমাদেরকে শিক্ষা দেয় উদারতা, মানবিকতাবোধ, অসাম্প্রদায়িকতা ও সহিষ্ণুতা। সব ধর্মের মিলিত সংস্কৃতিই আমাদের বাঙালি সংস্কৃতি। সুদীর্ঘকালের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সুমহান এ ঐতিহ্য আমাদের সবাইকে ধারণ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৮
ইএস/জেডএস