ধর্মীয় সম্প্রীতির এমন উজ্জ্বল নিদর্শন দেখতে হলে আসতে হবে সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাট শহরে। শহরের কালীবাড়ী এলাকার পুরান বাজার জামে মসজিদ ও কালীবাড়ী কেন্দ্রীয় মন্দিরটি একই উঠানে রয়েছে।
কেন্দ্রীয় কালীবাড়ী মন্দির কমিটির কোষাধ্যক্ষ সনদ চন্দ্র সাহা বাংলানিউজকে জানান, প্রায় দেড়শ’ বছর আগে কালীমন্দির হিসেবে এ মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়। যার কারণে এলাকাটির নামকরণও করা হয় কালীবাড়ী। পরে এখানে বাজার গড়ে উঠলে বাজারের ব্যবসায়ী ও শহরের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মন্দিরের পাশেই প্রতিষ্ঠা করেন পুরান বাজার জামে মসজিদ। সেই থেকে এক উঠানে চলছে দুই ধর্মের দুই উপাসনালয়ের কার্যক্রম।
তিনি আরো জানান, পূজা শুরুর আগে মসজিদ ও মন্দির কমিটি বসে সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্ত মতে, আজানের সময় থেকে নামাজের প্রথম জামায়াত শেষ হওয়া পর্যন্ত মন্দিরের মাইক, ঢাক-ঢোলসহ যাবতীয় শব্দ বন্ধ থাকে। নামাজের প্রথম জামায়াত শেষ হলে মন্দিরের কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়। সামান্যতম বিশৃঙ্খলাও হয় না এখানে। জন্মের পর থেকে এভাবে চলতে দেখছেন তিনি।
পুরান বাজার জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফজল মিয়া বাংলানিউজকে জানান, ধর্মীয় সম্প্রীতির এটি একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। যুগ যুগ ধরে একই উঠানে চলছে নামাজ ও পূজা-অর্চনা। নামাজের সময় মন্দিরের ঢাক-ঢোল বন্ধ রাখা হয়। আযান ও নামাজে তো খুব বেশি সময় লাগে না। এ সময় টুকু পূজারিরা ঢাক-ঢোলসহ অন্যান্য শব্দযন্ত্র বন্ধ রাখেন। কোনো বিশৃঙ্খলা ছাড়াই যুগ যুগ ধরে এ সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে ধর্মীয় উৎসব পালন করছেন তারা।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ বাংলানিউজকে বলেন, এখানকার মানুষ সব ধর্মের মানুষের সহাবস্থানে বিশ্বাস করেন। যার প্রমাণ এক উঠানে কেন্দ্রীয় কালীবাড়ী মন্দির ও পুরান বাজার জামে মসজিদ।
বাংলাদেশ সময়: ১০১১ ঘন্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৮
এসআই