বঙ্গবন্ধু তার যেসব রাজনৈতিক সহচর নিয়ে স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন, সদ্য স্বাধীন দেশের সরকার চালিয়েছিলেন, তাদের অনেকের মতো আবদুল মালেক উকিলও ধনসম্পদের জন্য কখনো রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করেননি। তাই তিনি ধনের বিচারে ধনী ছিলেন না।
আইনজীবী ও রাজনীতিক আবদুল মালেক উকিল ১৯২৪ সালের ১ অক্টোবর নোয়াখালী জেলার সদর উপজেলার রাজাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে তিনি তদানীন্তন যশোর জেলার মাগুরা কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। ১৯৪৯ সালে তিনি বিএ ডিগ্রি লাভ করেন এবং ১৯৫২ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন।
ছাত্রজীবনেই তিনি রাজনীতিতে যোগ দেন। তিনি পূর্ব বাংলা মুসলিম ছাত্রলীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য, কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি, ঢাকা হাইকোর্ট বার কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৬৬ সালে লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধীদলীয় সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একাংশের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি।
আবদুল মালেক উকিল ১৯৫৬, ১৯৬২ ও ১৯৬৫ সালে পরপর পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬৫ সালে তিনি প্রাদেশিক পরিষদে আওয়ামী লীগ সংসদীয় দলের ও সম্মিলিত বিরোধী দলের নেতা ছিলেন। ছয়দফা আন্দোলনকালে নিরাপত্তা আইনে তিনি কারাবরণ করেন। ১৯৭০ সালে নোয়াখালী-৪ আসন থেকে তিনি পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালে তিনি প্রবাসী মুজিবনগর সরকারের সাহায্য ও পুনর্বাসন কমিটির সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশ্বজনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে এক সংসদীয় দলের সদস্য হিসেবে তিনি নেপাল সফর করেন।
মালেক উকিল বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৭২ সালে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী ছিলেন। ১৯৭৩ সালে তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং নতুন মন্ত্রিসভায় তাকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯৭৫ সালে তিনি জাতীয় সংসদের স্পিকার নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য এবং সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৮৭ সালের ১৭ অক্টোবর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬৩ বছর বয়সে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৮
জেডএস