সাতসকালে বয়ে আসা হিমেল হাওয়ায় টের পাওয়া যাচ্ছে, ধীর পায়ে শীত নামছে প্রকৃতিতে। আর শুক্রবারের (১৯ অক্টোবর) শিশির ভেজা ভোর যেনো জানান দিলো ধীর পায়ে শীত আসছে।
কার্তিকের প্রথম সপ্তাহে এবার পদ্মাপাড়ের রাজশাহীতে শীতের আবহ তৈরি হয়েছে অনেকটা এমনই। গরম যাই যাই করলেও, শীতের প্রভাব পড়েনি। তবে আজ প্রথম কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরে পদধ্বনি পাওয়া যাচ্ছে শীতের। তাহলে কাঁপন ধরা শীত নামবে কবে? আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, ডিসেম্বরের আগে নয়। অর্থাৎ অগ্রহায়ণ পেরিয়ে পৌষ মাস এলেই নামবে কাঁপানো শীত।
এ সময় শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাবে রাজশাহীর ওপর দিয়ে। তবে বিভিন্ন কারণে এবার হেমন্তেই কড়া নাড়ছে শীত। এরইমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে ঘরের সিলিং ফ্যানটি। কংক্রিটের নগরে বন্দি থাকা মানুষগুলোর শরীরে শেষ রাতে উঠেছে কাঁথা।
গ্রামের চিত্র আরও সুশোভিত। পাখিদের ডানা ঝাঁপটানো শব্দ আর কিচিরমিচির ডাকে ঘুম ভাঙছে কৃষকের। আগুনে তপ্ত করা শরীর নিয়ে হালকা কুয়াশা ভেদ করে মাঠে নেমে পড়ছেন কৃষক। গাছিরা কোমরে রশি বেঁধে উঠে পড়ছেন খেজুর গাছে। নামাচ্ছেন মিষ্টি মধুর খেজুরের রস। পুকুরের পানিতে ফুটে থাকা শাপলাগুলো তুলতে দুরন্ত শিশুরা নেমে পড়ছে ঠাণ্ডা পানিতে। ঘরে-ঘরে শুরু হয়ে গেছে নবান্নের প্রস্তুতি, আর পিঠাপুলির আয়োজন।
এদিকে আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই এবার শীত পড়তে শুরু করবে। রাতের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমতে থাকবে।
এর সঙ্গে দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে এবং নদী অববাহিকায় ভোরে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। এ সময় প্রতিদিন গড়ে সাত থেকে আট ঘণ্টা সূর্যের কিরণকাল থাকতে পারে। তবে ডিসেম্বরের শেষ দিকে দু’একটি মৃদু অথবা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের প্রভাবে উত্তরাঞ্চলে জেঁকে বসতে পারে শীত।
শৈত্যপ্রবাহে তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসতে পারে। এছাড়া মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেলে আরও ২ ডিগ্রি কমে তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলিসয়াসে নেমে আসতে পারে। একইসঙ্গে ঘন কুয়াশাও পড়বে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত আবহাওয়া কর্মকর্তা আবদুল মান্নান বাংলানিউজকে বলেন, নভেম্বর মাসে দেশে হাড় কাঁপানো শীত খুব একটা পড়ে না। এর কারণ হচ্ছে সূর্য যতো দক্ষিণ গোলার্ধের দিকে যাবে শীতের তীব্রতা ততটাই বাড়তে থাকবে। তাছাড়া দিনের ব্যাপ্তি কমে আসায় সাধারণত ডিসেম্বর মাস থেকেই বাংলাদেশে শীত পড়তে শুরু করে।
তখন উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল থেকে বাতাস বাংলাদেশের দিকে আসায় তাপমাত্রা আরও কমে আসে। এর সঙ্গে যদি সাইবেরিয়া থেকে আসা হিমেল বাতাস যোগ হয় তাহলেই হাড় কাঁপানো শীত পড়বে। তাই এমন পরিস্থিতি ডিসেম্বরের আগে সাধারণত হয় না।
তবে শীত না পড়লেও রাজশাহীর গড় তাপমাত্রা ৩৩ থেকে ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে। বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৮
এসএস/জেডএস