শুক্রবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের পারহাজী গ্রামের নদীপাড়ের সড়ক নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। জরুরি ভিত্তিতে যদি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয় তাহলে সড়কের নদীর পারের বাকি অংশও নদীগর্ভে যেকোন সময় বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, সড়কটির বিলীন হওয়া অংশটিতে ৪-৫ দিন আগ থেকে হালকা ফাটল শুরু হয়। কিন্তু সড়কটি রক্ষায় কেউই এগিয়ে না আসায় শেষ রক্ষা হলো না। শুক্রবার সন্ধ্যার আগে সড়কটি নদীতে বিলীন হয়ে যায়।
যেকোন সময়ে নদী সংলগ্ন বসবাসকারী শতাধিক বসতবাড়ি নদীগর্তে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষসহ স্কুল- কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চলাচল করে। সড়কটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় মারাত্মক দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকাবাসী। এমন অবস্থায় যদি কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েন, দ্রুত চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে আসা অসম্ভব।
স্থানীয়রা জানান, তেরখাদা উপজেলা পারহাজী গ্রামের স্লুইস গেট এলাকায় সড়কের বেশ কিছু অংশ ৪-৫ দিন আগে ফাটল ধরেছিল। ফাটলের পর থেকে সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ঝুঁকি নিয়ে পায়ে হেঁটে মানুষ এ কয়দিন চলাচল করেছে।
সময়মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলে হয়তো চলাচলের এই সড়কটি রক্ষা করা যেত। শুক্রবার সড়কটি ভেঙে নদীতে চলে যাওয়ায় হাজার হাজার মানুষকে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
দ্রুত সড়কটির পাশে গাইডওয়াল স্থাপন করে সড়কটি নির্মাণের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
সড়কটিতে নিয়মিত চলচলকারী জিয়াউল হক মিলন শনিবার (২০ অক্টোবর) সকালে বাংলানিউজকে বলেন, সড়কের প্রায় আধা কিলোমিটার জায়গা নদীগর্ভে চলে গেছে। সড়কটি বন্ধ হওয়ায় আমাদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হবে।
তিনি অভিযোগ করেন, বছরখানেক আগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে রাস্তাটি করা হয়। যেভাবে করা উচিত ছিলো সেভাবে না করায় আজকে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এলাকার বাসিন্দা সেলিম নামের এক ব্যক্তি বলেন, রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় লোকজনের জেলা ও উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে বিভিন্ন স্থানে নতুন করে ফাটল দেখা দেওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এলকাবাসী। রাস্তার পাশের বাড়িঘরের মানুষরা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
রাসেল নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, খুলনা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ীরা মালামাল আনতে পারছেন না।
তেরখাদা উপজেলা চেয়ারম্যান সরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু বাংলানিউজকে বলেন, কয়েকদিন আগে ফাটল ধরেছিলো। শুক্রবার ভাঙনে প্রায় আধা কিলোমিটার রাস্তা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ কারণে ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ভাঙন কবলিত এলাকা মধুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ মো. মহসিন বাংলানিউজকে বলেন, পারহাজী গ্রামের আতাই নদীতে ইতোমধ্যে ৭০ মিটার সড়ক ভেঙে চলে গেছে। এতে সড়ক দিয়ে যানসহ মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে গেয়ে। সড়ক ভাঙন এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। স্থানীয় সংসদ সদস্যকে বিষয়টি জানিয়েছি। ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তারা দুই-একদিনের মধ্যেই ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৮
এমআরএম/আরআর