শনিবার (২০ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটায় সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে এ ঘোষণা দেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক উছমান আলী। এর আগে দুপুরে সমাবেশ শুরু হয়।
তিনি বলেন, শ্রমিকরা ফাঁসির দড়ি গলায় নিয়ে গাড়ি চালাবে না। এ কর্মসূচির আগে ২৭ অক্টোবরের মধ্যে আইন বাতিল না করলে ৪৮ ঘণ্টা কর্মবিরতির পর ৯৬ ঘণ্টা কর্মবিরতিতে যাবেন শ্রমিকরা। এরপরও আইন বাতিল না হলে রাষ্ট্রের ভাল-মন্দ বিবেচনায় না করে অনির্দিষ্টকাল ধর্মঘট আহ্বান করা হবে।
সিলেট বিভাগীয় সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের উদ্যোগে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্বে করেন ফেডারেশনের বিভাগীয় সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিক। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উছমান আলী আরও বলেন, শ্রমিকরা বেরিয়ে গেলে দাবি আদায় করা করা পর্যন্ত রাস্তায় থাকবে। তাই জামিন অযোগ্য আইন বাতিল না করলে সারাদেশে উত্তাপ ছড়ানোর জন্য শ্রমিকদের প্রস্তুত থাকতে বলেন তিনি।
নিরাপদ সড়ক দিবস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন থেকে শ্রমিকরা সরকারি এই দিবসের অনুষ্ঠানে যাবে না। সারাদেশে ইলিয়াস কাঞ্চনের সব অনুষ্ঠান বর্জন করতে শ্রমিকদের নির্দেশনা দেন তিনি।
২২ অক্টোবর সড়ক পরিবহন দিবস শ্রমিকরা মানে না। ইলিয়াস কাঞ্চন তার স্ত্রী দুর্ঘটনায় নিহতের দিনটিকে দিবস হিসেবে ঘোষণা দিয়ে এখন এনজিওতে পরিণত করেছেন। বরং চট্টগ্রামে দুর্ঘটনায় ৪৫ ছাত্র নিহতের দিবসটিকে নিরাপদ সড়ক চাই করার দাবি জানান তিনি। তবেই শ্রমিকরা নিরাপদ সড়ক চাই দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
সমাবেশে বিশেষ অতিথিরে বক্তব্য রাখেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি আব্দুর রহিম বক্স দুদু ও সাদিকুর রহমান হিরু বলেন, রোগীকে যেভাবে ডাক্তার-নার্সরা সেবা দেয়, ঠিক সেভাবে পরিবহন শ্রমিকরা দেশের ১৬ কোটি মানুষকে সেবা দিচ্ছে।
সরকারকে উদ্দেশ্য করে তারা বলেন, সড়কে যানবাহন চললে দেশের অর্থনীতি সচল থাকে। আর গাড়ি না চললে অর্থনীতিতে ভাটা পড়বে। আইন পাস হয়ে গেলেও শ্রমিকরা আন্দোলনের মাধ্যমে সেই আইন বাতিল করাবে।
বিভাগীয় শ্রমিক সমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতারা ছাড়াও সিলেট বিভাগের সব উপ-কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ শ্রমিকরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে শ্রমিক সমাবেশকে কেন্দ্র করে দিনভর সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে দূরপাল্লার যান বন্ধ ছিল। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। বিকেল সাড়ে ৩টায় সমাবেশ শেষে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে যাত্রী নিয়ে যানবাহন ছেড়ে যায়।
শ্রমিক ফেডারেশনের ৮ দফা দাবিগুলো- সড়ক দুর্ঘটনাকে দুর্ঘটনা হিসেবে দেখে সব মামলা জামিনযোগ্য বিধান সন্নিবেশ, শ্রমিকদের দণ্ড ৫ লাখ টাকার পরিবর্তে ৫০ হাজার করা, সড়ক দুর্ঘটনার জটিলতর মামলার তদন্ত কমিটিতে শ্রমিক মালিক প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা, ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণির স্থলে পঞ্চম শ্রেণি নির্ধারণ করা, গাড়ির কাগজপত্র চেকিঙের নামে সড়কে পুলিশের অহেতুক হয়রান বন্ধ করা, ওয়েস্কেলে জরিমানার পরিমাণ কমানো ও কারাদণ্ডের বিধান বাতিল করা, আইনের কোনো কোনো ধারায় অর্থদণ্ডের পরিমাণ উল্লেখ না থাকায় জটিলতা সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে এগুলো সংশোধন করা এবং আলোচনার মাধ্যমে আইন সংশোধন করা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৮/ আপডেট:
এনইউ/এএটি