রোববার (২১ অক্টোবর) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের ২৩তম অধিবেশনের প্রথম বৈঠকে বিলটি উত্থাপন করেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইনমত আরা সাদেক। পরে বিলটি অধিকতর পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
প্রস্তাবিত আইনে সরকারকে, সরকারি গেজেট আদেশ দ্বারা প্রজাতন্ত্রের যে কোনো কর্ম বা কর্ম বিভাগ সৃজন, সংযুক্তকরণ, একীকরণ, বিলুপ্তিকরণসহ অন্য যে কোনোভাবে পুনর্গঠন করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, জারি করা আদেশ দ্বারা নিয়োজিত সরকারি কর্মচারীর কর্মের শর্তাবলীর তারতম্য বা রদ করা যাবে। এছাড়া প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিতদের নিয়োগ ও কর্ম সম্পর্কিত যে কোনো শর্ত নির্ধারণ করতে পারবে। একইসঙ্গে চাকরির দায় ও এখতিয়ার নির্ধারণ ও পরিবর্তন করতে এবং জনস্বার্থে আইনানুগ যে কোনো কর্মে বা দায়িত্বে নিয়োজিত করতে পারবে।
আইনের নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন বিষয়ে বলা হয়েছে, এই আইনের আওতাভুক্ত কোনো কর্ম বা কর্ম বিভাগে সরাসরি জনবল নিয়োগের ভিত্তি হবে মেধা ও উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা। তবে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৯(৩) এর উদ্দেশ্য পূরণ কল্পে পদ সংরক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়ে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে।
পদোন্নতির ভিত্তি হবে সততা, মেধা, দক্ষতা, জ্যেষ্ঠতা, প্রশিক্ষণ ও সন্তোষজনক চাকরি। সরকারি চাকরির শিক্ষানবিশকাল ও চাকরি স্থায়ীকরণ সম্পর্কিত বিষয় ও শর্তাধি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হবে। এছাড়া আইনে কোনো বিদেশি নাগরিককে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত করা যাবে না মর্মে বিধান রাখা হয়েছে। একইসঙ্গে বলা হয়েছে, আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে সেবা গ্রহণ কোনো অর্থেই প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বলে গণ্য করা যাবে না।
প্রস্তাবিত আইনের ৩২ অনুচ্ছেদে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের লঘু ও গুরুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। লঘু শাস্তির মধ্যে রয়েছে তিরষ্কার, নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য পদোন্নতি বা বেতন স্থগিত, বেতন স্কেলের নি¤œধাপে অবনতি ও সরকারি আদেশ অমান্য বা কর্তব্যে ইচ্ছাকৃত অবহেলার কারণে সরকারি অর্থ বা সম্পত্তির ক্ষতি সংঘটিত হলে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ আদায়।
গুরুদণ্ডের মধ্যে রয়েছে, নিম্নপদ বা নিম্ন বেতন স্কেলের অবনতি, বাধ্যতামূলক অবসর, অপসারণ ও চাকরি থেকে বরখাস্ত। প্রস্তাবিত আইনের ৩২ অনুচ্ছেদের ক্ষতিপূরণের অর্থ আদায়ে ৩৩ অনুচ্ছেদ যুক্ত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, দায়ী কর্মচারীর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণের অর্থ আদায় করতে হবে।
প্রস্তাবত আইনে সরকারি কর্মচারীদের দ্বারা ফৌজদারি অপরাধ সংঘটনের দায়ে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সম্পর্কিত অভিযোগে দায়ের করা ফৌজদারি মামলায় আদালতের অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ার আগে তাকে গ্রেফতার করতে হলে সরকার বা নিয়োগকারী কতৃপক্ষের পূর্বানুমতি নিতে হবে।
সামগ্রিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সরকারি চাকরি সংক্রান্ত একটি সমন্বিত আইন প্রণয়নে প্রয়োজিনীয়তা দীর্ঘদিন থেকে অনুভূত হওয়ায় সরকারি চাকরি আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। আইনটি মন্ত্রিসভা অনুমোদন করেছে।
ড. কামালের জোট নিয়ে সংসদে আলোচনার দাবি
বাংলাদেশ সময়: ২২০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৮
এসকে/এসএম/এএ