বিরক্ত হয়ে তিনি বললেন, রাস্তা ফাঁকা থাকলে অফিস যেতে সময় লাগে ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা। কিন্তু আজ বাড্ডা পর্যন্ত আসতেই ৪৫ মিনিটের বেশি সময় লেগেছে।
আসাদের মতো অনেকেই রাজধানীতে প্রতিদিন এমন পরিস্থিতিতে পড়ছেন। স্টপেজের তোয়াক্কা না করে চালক ও হেলপারের (চালকের সহকারী) ইচ্ছাতে যেখানে-সেখানে চলছে যাত্রী ওঠানামা।
অন্যদিকে ট্রাফিক বিভাগ বলছে, প্রতিদিনের মামলার অর্ধেকই হচ্ছে নির্দিষ্ট স্টপেজের বাইরে গাড়ি রাখায়। আগের চেয়ে এখন সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। এ ব্যাপারে যাত্রীদেরও সচেতন হওয়া দরকার।
রাজধানীর মালিবাগ এলাকায় দেখা গেছে, মালিবাগ রেলগেট থেকে রামপুরা অভিমুখে বাস স্টপেজ না হলেও চালক ও হেলপারদের অঘোষিত স্টপেজে পরিণত হয়েছে। প্রায় প্রতিটি গাড়িকে সেখানে থেমে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
অবশ্য দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থাও নিচ্ছেন। সকাল ১১টা পর্যন্ত পাঁচটি মামলার তিনটি নির্দিষ্ট বাস স্টপেজের বাইরে গাড়ি থামিয়ে যাত্রী ওঠানোতে করা হয়েছে। একই চিত্র দেখা গেছে মৌচাক, মগবাজার, ওয়ারলেস ও মগবাজার মোড় এলাকায়।
নির্দিষ্ট বাস স্টপেজের বাইরে কেনো গাড়ি থামিয়ে যাত্রী ওঠানো হয় এ বিষয়ে রাইদা পরিবহনের চালক ইমরান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা নির্দিষ্ট স্টপেজেই গাড়ি রাখতে চায় কিন্তু সেখানে যাত্রী থাকে না। যাত্রীরা রাস্তার বিভিন্ন স্থানে দাঁড়িয়ে থাকে। আমাদেরও যাত্রী দরকার তাই তাদের ওঠাতে হয়।
গত ২৯ জুলাই কর্মিটোলায় জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। এ দুর্ঘটনার পরে ঢাকার রাজপথে নেমে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের পর থেকে কঠোর হয় ট্রাফিক বিভাগ। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই আগের অবস্থায় ফিরে গেছে বাসচালক ও হেলপাররা।
এ বিষয়ে সবুজবাগ জোনের দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট সরওয়ার বাংলানিউজকে বলেন, আমরা প্রতিটি চালকদের আগে সতর্ক করছি, নির্দিষ্ট ট্রাফিক মানার জন্য উৎসাহিত করছি। এরপরও তারা সেটা না মানলে আমরা মামলা করছি। অনেক ক্ষেত্রে আমরা গাড়ি রেকার করি।
মাঝ রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে যাত্রী ওঠানোর চিত্র দেখা গেছে, নতুন বাজার, নর্দা, কুড়িল এলাকায়ও। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বাসে উঠছেন যাত্রীরা।
সাইফ নামে এক শিক্ষার্থীকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, বাসগুলো মামলার ভয়ে এখন রাস্তার সাইড দিয়ে আসে না। মাঝ রাস্তা দিয়ে যায়, যাত্রী পেলে তারা গতি কমিয়ে দেন তখন আমরা উঠি।
বাড্ডা জোনের সার্জেন্ট সৈয়দ বাহাউদ্দিন বলেন, আমরা চেষ্টা করি যাতে গণপরিবহনে হ-য-ব-র-ল অবস্থা না হয়। এরপরও চালকরা নির্দিষ্ট বাস স্টপেজ মানতে চায় না। তবে আমাদের অবস্থান কঠোর। শৃঙ্খলা ফেরাতে আমরা প্রতিদিনই গাড়ি রেকার করছি, মামলা দিয়ে যাচ্ছি। এটা অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৮
ইএআর/আরআর