সোমবার (২২ অক্টোবর) সকাল ৭টায় প্রথমে আদমজী ইপিজেডের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেন সোয়াদ ফ্যাশনের শ্রমিকরা। পরে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে চাইলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।
পরে আবার ৮টার দিকে শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে। সেখান থেকে তাদের সরিয়ে দিতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে তাদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে শ্রমিকরা অর্ধশতাধিক গাড়ি ভাংচুর করেন এবং একটি কাভার্ড ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে ও শ্রমিকদের উপর লাঠিচার্জ করে। এতে তিন পুলিশ সদস্যসহ আহত হন অর্ধশত শ্রমিক। সেখান থেকে সাতজন শ্রমিককে আটকের অভিযোগ করেছেন শ্রমিকরা। আহত শ্রমিকদের বিভিন্ন স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জ শিল্প পুলিশের এসপি জাহিদুর রহমান জানান, শ্রমিকরা অবস্থান নিয়ে আছে, তবে পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে। কোনো শ্রমিককে আটক করা হয়নি। তাদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
এর আগে ২২ সেপ্টেম্বর বকেয়া বেতন, ছুটি ও ফান্ডের টাকা পরিশোধ না করায় এবং শ্রমিকদের না জানিয়ে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেওয়ায় বিক্ষুদ্ধ হয়ে তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
বিক্ষোভকারী পোশাক শ্রমিকদের অভিযোগ, সোয়াদ ফ্যাশনে সাড়ে তিন হাজার শ্রমিক কাজ করছেন। ৫-৬ মাস ধরে ঠিকমতো বেতন পরিশোধ করছে না কারাখানা কর্তৃপক্ষ। সেইসঙ্গে বোনাস, ছুটি ও রিজার্ভ ফান্ডের টাকাও দেওয়া হয়নি।
সোয়াদ ফ্যাশনের কর্মরত আরিফ হোসেন বলেন, কর্তৃপক্ষ আমাদের না জানিয়ে হঠাৎ কারখানা বন্ধ করে দেয়। শুনতে পেরেছি মালিক কারাখানা বিক্রি করে দিয়েছে। একইসঙ্গে বিগত ৪ বছরের ছুটি, ফান্ড ও রিজার্ভের টাকাও আমাদের পরিশোধ করা হয়নি।
একই কারখানার শ্রমিক মো. সবুজ বলেন, আমরা বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেপজা) বিষয়টি জানিয়েছি। তারা বলছে, এ ব্যাপারে তারা কিছুই জানে না। অথচ এর আগে মালিকপক্ষ বেতন নিয়ে গড়িমসি করলে আমরা বেপজার কাছে গেলে কারখানা এই সমস্যা সমাধানের জন্য তারা আমাদের বিভিন্ন ধরনের আশ্বাস দেয়। কিন্তু আজ তারা বলছে কিছুই জানে না।
এদিকে বিক্ষুব্ধ পোশাক শ্রমিকরা সকাল থেকে ইপিজেড গেট সংলগ্ন আদমজী-ডেমরা-নারায়ণগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে রাখায় সকাল থেকেই সড়কের দুই দিকেই দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে সড়কটিতে একেবারেই যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৮
আরআর