মামলার আসামিরা হলেন ওই গ্রামের লাম মিয়ার দুই ছেলে মিজান মিয়া (৩৮) ও জাহাদুল (২০)। মামলার পর ওই রাতেই মিজানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ধর্ষণের শিকার শিশুটি একই এলাকার এক দিনমজুরের মেয়ে। সে স্থানীয় একটি দাখিল মাদরাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুটির মা জানান, ‘গেল ১৫ রমজান ও ৬ অক্টোবর দুই দফায় ধর্ষণের শিকার হয় আমার দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েটি। ১৫ রমজান দুপুরে স্থানীয় বারুইখালী বাজার থেকে আসার পথে জাহাদুল মেয়েটিকে মুখ চেপে জনৈক খোকনের ঘেরের বাসায় নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে অসুস্থ অবস্থায় তাকে মোংলার একটি হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। চিকিৎসা শেষে এলাকায় আসলে স্থানীয় ইউপি সদস্য ছাইদুল সালিস মীমাংসার কথা বলে জাহাদুলকে মারধর করেন। মারধরের পরে জাহাদুল গা ঢাকা দেয়। পরে লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়টি নিয়ে আর কোথাও অভিযোগ করি নাই। ’
‘এরপর দ্বিতীয় দফায় গত ৬ অক্টোবর (শনিবার) সন্ধ্যায় বাজার থেকে আসার পথে জাহাদুলের বড় ভাই মিজান শিশুটিকে খোকনের ঘেরের বাসায় নিয়ে ধর্ষণ করে। ভয়ে সে এ বিষয়টি কাউকে জানায়নি। কিন্তু ২১ অক্টোবর (রোববার) সকালে আমার মেয়ে অনেক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। ’
তিনি বলেন, ‘আমরা খুবই অসহায়। আমার মেয়ের ওপর অত্যাচারের বিচার চাই। ’
এদিকে বিষয়টি জানার পরে জাতীয় মহিলা পরিষদ, উদয়ন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন নারী সংগঠনের নেত্রীরা হাসপাতালে শিশুটিকে দেখতে যান।
বাগেরহাট জাতীয় মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট পারভিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনা শোনার পরে মহিলা পরিষদের পক্ষ থেকে চার সদস্যের একটি টিম শিশুটি দেখতে হাসপাতালে যায়। শিশুটির কাছ থেকে ধর্ষণ নামক পৈশাচিক নির্যাতনের বিষয়টি শুনেন। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। পাশাপাশি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম আজিজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে শিশুটির মাকে থানায় আসার অনুরোধ করি। রাত ১১টার দিকে তিনি থানায় এসে দুই জনকে আসামি করে মামলা করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে মিজানকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মিজান ও তার ছোট ভাইয়ের অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন।
গ্রেফতার মিজানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জাহাদুলকে গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৮
জিপি