ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘সন্তানের এমন করুণ মৃত্যু আমার ভাগ্যেই লেখা ছিলো’

আবাদুজ্জামান শিমুল, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৮
‘সন্তানের এমন করুণ মৃত্যু আমার ভাগ্যেই লেখা ছিলো’ চাচা আকরামের কোলে নিহত নাবিলা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ‘আমার ভাগ্যেই লেখা ছিলো শিশু সন্তানের করুণ মৃত্যু, তাই হয়েছে। এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’ সড়ক দুর্ঘটনায় এক বছরের শিশুকে হারিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন মুদি দোকানি ইমরান হোসেন।

রোববার (২১ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় রিকশায় থাকা মায়ের কোল থেকে পড়ে ইমরানের শিশুসন্তান নাবিলার মৃত্যু হয়।

সোমবার (২২ অক্টোবর) দুপুর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে শিশুটির মরদেহ নিতে এসে ইমরান যেন বোবা হয়েছিলেন।

বাংলানিউজ কথা বললে তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার চার সন্তানের মধ্যে নাবিলা ছিলো সবার ছোট। বড় সন্তান নাঈম কুয়েত থাকে। আমি শিশু সন্তান ও স্ত্রী নাজমা বেগমকে নিয়ে আদাবর মুনসুরাবাদ হাউজিং এলাকায় থাকি। দুর্ঘটনার সময় আমি মুদি দোকানে ছিলাম। শ্বশুরের কাছ থেকে খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যাই। সেখানে গিয়ে নাবিলার মরদেহ দেখতে পাই। ’

ইমরান আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার বলার কিছু নেই। নিউমার্কেট থেকে আমার স্ত্রী ও শ্যালক রাসেল রিকশাযোগে বাসায় ফিরছিলেন। এসময় আমার স্ত্রীর কোলে ছিলো শিশুসন্তান নাবিলা। রিকশাটি মোহাম্মদপুর আরমান হাসপাতালের সামনে পৌঁছালে পেছন থেকে একটি পিকআপ ভ্যান ধাক্কা সেটিকে দেয়। এতে সবাই রিকশা থেকে ছিটকে পড়ে যায়। রিকশার চাকা উঠে যায় আমার শিশুর কোমল শরীরের উপর দিয়ে। পরে নাবিলাকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে গিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ’

‘মায়ের কোলে নিরাপদে থাকা আমাদের শিশু সন্তানের এভাবে মৃত্যু, আমার ভাগ্যেই লেখা ছিলো। ’ কাঁদতে কাঁদতে বলেন ইমরান।

ময়নাতদন্ত শেষে দুপুরে শিশু নাবিলার মরদেহ নিয়ে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার বাটের হুদ গ্রামে উদ্দেশে রওনা হয়েছে পরিবার।

হাসপাতালে সূত্রে জানা যায়, ময়নাতদন্তের সময় দেখা যায় মাথায় আঘাতের কারণে নাবিলার মৃত্যু হয়েছে।

মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জামাল উদ্দিন মীর জানান, শিশু নাবিলার মৃত্যুর ঘটনায় তার মামা রাসেল বাদী হয়ে নিরাপদ সড়ক আইনে একটি মামলা করেছেন। মামলায় পিকআপ ভ্যানচালক আবদুল হামিদ (৩৫) আসামি করা হয়েছে। পরে ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৮
এজেডএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।