আইনে ফৌজদারি অপরাধ সংঘটনে কোনো শিশু জড়িত থাকলেও পুলিশি তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের সঙ্গে প্রতিবেদন না দিয়ে শিশুর জন্য পৃথক প্রতিবেদন তৈরি করার এবং অপরাধ আমলে নেওয়ার ক্ষেত্রে শিশু হিসেবে পৃথকভাবে আমলে নেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।
সোমবার (২২ অক্টোবর) রাতে জাতীয় সংসদে বিলটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করেন সমাজ কল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।
বিলে বিদ্যমান আইনের ধারা ১৬ এর পরিবর্তে নতুন ১৬ ধারা প্রতিস্থাপনের বিধান করা হয়। এ ধারায় শিশু কর্তৃক সংঘটিত যেকোনো অপরাধের বিচারের জন্য প্রতি জেলায় এক বা একাধিক শিশু আদালত স্থাপনের বিধান করা হয়। এ ক্ষেত্রে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর অধীন গঠিত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল থাকলে শিশু আদালত হিসেবে গণ্য হবে। তবে কোনো জেলায় এ ধরনের ট্রাইব্যুনাল না থাকলে ওই জেলার জেলা ও দায়রা জজ শিশু আদালত হিসেবে গণ্য হবেন। শিশু আদালত দায়রা আদালতের সব ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যাবলী সম্পাদন করা যাবে।
বিলের ১৫ ধারায় বলা হয়েছে, পুলিশ রিপোর্ট বা অনুসন্ধান প্রতিবেদন অথবা তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধি বা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যা-ই থাকুক না কেন, কেনো অপরাধ সংঘটনে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ও শিশু জড়িত থাকলে, পুলিশ রিপোর্ট (জিআর মামলার ক্ষেত্রে), অনুসন্ধান প্রতিবেদন (সি আর মামলার ক্ষেত্রে) বা তদন্ত প্রতিবেদনে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ও শিশুর জন্য পৃথকভাবে প্রস্তুত করে দাখিল করতে হবে।
বিলে বলা হয়েছে, মামলা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে যেই আদালতে নিষ্পন্নাধীন নিষ্পন্নাধীন সেই আদালত উদ্যাগে নিয়ে স্থানান্তর প্রক্রিয়া শিশু (সংশোধন) আইন ২০১৮ কার্যকর হওয়ার ৯০ কার্য দিবসের মধ্যে সম্পন্ন করবে। তবে ওই সময়ের মধ্যে মামলা স্থানান্তর সম্পন্ন করা সম্ভব না হলে স্থানান্তরকারী শিশু আদালতে আবেদন করলে সংশ্লিষ্ট দায়রা জজ আদালত আরও ৪৫ কার্যদিবস সময় বাড়াতে পারবেন।
আইনের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শিশু আইন, ১৯৭৪ যুগোপযোগী করে শিশু আইন, ২০১৩ প্রণয়ন করা হয়। এ আইন কার্যকর হওয়ার পর এর কিছু প্রয়োগিক সমস্যার সৃষ্টি হওয়ায় এর কতিপয় ধারা সংশোধনের নিমিত্তে শিশু (সংশোধন) আইন, ২০১৮ শীর্ষক বিলটি সংসদের বিবেচনার জন্য আনা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৮
এসএম/ওএইচ/