ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

হাউজ বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট বিল পাস

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৮
হাউজ বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট বিল পাস

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: গৃহায়ন ও ইমারত নির্মাণ প্রযুক্তি সম্পর্কে কারিগরি পরামর্শ নেওয়ার জন্য বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সাথে দ্বি-পাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদনের বিধান রেখে ‘হাউজ বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট বিল-২০১৮’ পাস হয়েছে।

সোমবার (২২ অক্টোবর) রাতে বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। যদিও বিলে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির একাধিক সদস্য জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব করেন।

তবে তাদের সেই প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।

বিলে বলা হয়, যেহেতু সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন ২০১১ দ্বারা সংবিধানের চতুর্থ তফসিলের ৩ ক এবং ১৮ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত হওয়ায় এবং উচ্চ আদালত কর্তৃক সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল হওয়ায় সামরিক সরকারের অধ্যাদেশগুলোর কার্যকারিতা লোপ পায়। তবে ২০১৩ সালের ৬ নং আইন দ্বারা কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকর রাখা হয়। অধ্যাদেশ সমূহের আবশ্যকতা বিবেচনা করে সরকার প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জন ক্রমে নতুনভাবে আইন প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেয়।

আইনে সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে গৃহায়ন ও ইমারত নির্মাণ প্রযুক্তি সম্পর্কে কারিগরি পরামর্শ নেওয়ার জন্য দেশি, বিদেশি বা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার সাথে প্রতিষ্ঠানের সাথে দ্বি-পাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদনের বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া আইনে গৃহায়ন ও ইমারত নির্মাণ সংক্রান্ত বিষয়ে গবেষণার জন্য ফেলোশিপ ও বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা প্রবতর্নের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

হাউজ বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালনার ২১ জন সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকবে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী পর্ষদের চেয়ারম্যান এবং একই মন্ত্রণালয়ের সচিব পদাধিকার বলে ভাইস চেয়ারম্যান হবেন। তবে মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী থাকলে তারা ভাইস চেয়ারম্যান হবেন এবং সচিব সদস্য হিসেবে থাকবেন।  

এছাড়া কমিটিতে সরকারি প্রতিনিধিদের বাইরে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ জন অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে একজন অধ্যাপক, রিয়েল এস্টেট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) সভাপতি বা মনোনীত প্রতিনিধি, ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট মনোনীত একজন ফেলো, ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্ট মনোনীত একজন ফেলো, ইমারত ডিজাইন প্রণয়নে নিয়োজিত পরামর্শ প্রকৌশলীদের থেকে সরকার মনোনীত একজন প্রতিনিধি, ইমারত নিমার্ণ ফার্মসমূহ থেকে একজন সরকার মনোনীত প্রতিনিধি এবং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের দুইজন প্রতিনিধি থাকবেন।  

হাউজ বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক পর্ষদের সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। সরকার গৃহায়ন ও ইমারত নির্মাণ সংক্রান্ত বিষয়ে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের মধ্য থেকে নির্ধারিত শর্তসাপেক্ষে মহাপরিচালক নিয়োগ দেবে।  

‘ইনস্টিটিউট’ ইমারত নকশা প্রণয়ন ও নির্মাণ, নির্মাণ উপকরণ-শিল্প এবং মানব বসতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সমস্যার উপর কারিগরি ও বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান এবং গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এছাড়া দুর্যোগ সহনীয়, আধুনিক কৌশল, টেকসই নতুন উপকরণ এসব বিষয়ে যৌথ সমীক্ষা পরিচালনা ও গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণ করবে রিসার্চ ইনস্টিটিউট।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গবেষণা ও পরীক্ষার মাধ্যমে গৃহায়ন ও নির্মাণ ক্ষেত্রে যুগোপযোগী জ্ঞান আহরণ, দেশীয় নির্মাণ উপকরণের সর্বোত্তম ব্যবহার এবং পরিবেশ বান্ধব দুর্যোগ সহনীয় সাশ্রয়ী আবাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৩ জানুয়ারি ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন গণপূর্ত ও নগর উন্নয়ণ মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘হাউজ বিল্ডিং রিসার্চ সেন্টার প্রকল্প’ অনুমোদন করেন। পরবর্তী সময়ে প্রকল্পের ব্যপ্তি বিবেচনা করে ১৬ অক্টোবর ১৯৭৭ সালে ‘হাউজ বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট অর্ডিন্যান্স, ১৯৭৭’ জারি করা হয়।  

সম্প্রতি মন্ত্রিসভা বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তের আলোকে অধ্যাদেশটি সংশোধন ও পরিমার্জন করে নতুন আইন আকারে বাংলা ভাষায় প্রণয়ন করা হয়। আইনটি বাস্তবায়িত হলে পরিবেশবান্ধব, দুর্যোগ সহনীয়, ব্যয় সাশ্রয়ী ও ব্যাপক জনগোষ্ঠীর ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে সবার জন্য আবাসন সহজলভ্য করার স্বার্থে সুপরিকল্পিত উন্নয়ন নিশ্চিত করা যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৮
এসএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।