ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দৃশ্যমান রূপসা রেলসেতু, ২০ শতাংশ কাজ শেষ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৮
দৃশ্যমান রূপসা রেলসেতু, ২০ শতাংশ কাজ শেষ দৃশ্যমান রূপসা রেলসেতু। ছবি: বাংলানিউজ

খুলনা: দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পের রূপসা রেল সেতুর কাজ। দিন-রাত চলছে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ। একের পর এক পিলার (খুঁটি) মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে খরস্রোতা খুলনার রূপসা নদীর বুকে। আর এর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হচ্ছে রূপসা রেলসেতু।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদন করে। পরে ২০১২ সালের নভেম্বর প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ পায় সিইজি নিপ্পন কোয়ি জেভি নামক ভারতীয় প্রতিষ্ঠান।

২০১৭ সালের ১৫ অক্টোবর রূপসা রেলসেতুর পাইলিঙের কাজের উদ্বোধন করেন রেল মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন। দৃশ্যমান রূপসা রেলসেতু।                                          ছবি: বাংলানিউজখুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পটির কাজ তিনটি অংশে বিভক্ত করা হয়েছে। একটি রেলসেতু, অপরটি রেললাইন এবং অন্যটি টেলিকমিউনিকেশন ও সিগন্যালিং। খুলনার ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত আটটি স্টেশন হচ্ছে। স্টেশনগুলো-ফুলতলা, আড়ংঘাটা, মোহাম্মদ নগর, কাটাখালী, চুলকাঠি, ভাগা, দিগরাজ ও মোংলা। খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এর মধ্যে রেললাইনের জন্য ১ হাজার ১৪৯ কোটি ৮৯ লাখ এবং সেতুর জন্য ১ হাজার ৭৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। বাকী টাকা জমি অধিগ্রহণে ব্যয় করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন (জিওবি) ও ভারত সরকারের আর্থিক সহায়তায় এই রেলপথটি নির্মাণ করা হচ্ছে।

ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান লারসেন অ্যান্ড টাব্র রূপসা নদীর ওপর মূল রেলসেতুর কাজ সম্পন্ন করছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে মোংলা বন্দরের সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে। নির্মাণ কাজ শেষে ২০২০ সালের মধ্যে খুলনা ও মোংলা বন্দরের সঙ্গে যুক্ত হবে সারা দেশের রেল যোগাযোগ।  

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খুলনা-মোংলা রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত। এটি সম্পন্ন হলে মোংলা বন্দরে আরও গতি সঞ্চার হবে। এটি মোংলা বন্দরের সঙ্গে খুলনা তথা সমগ্র বাংলাদেশের রেল সংযোগ তৈরি করবে। কম খরচে ভারত, নেপাল ও ভুটানে মালামাল পরিবহন সহজ হবে। বিভিন্ন স্থান থেকে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা সহজে সুন্দরবন ভ্রমণ করতে পারবেন। দৃশ্যমান রূপসা রেলসেতু।  ছবি: বাংলানিউজসরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর পশ্চিম পাড় বটিয়াঘাটা উপজেলার পুটিমারী ও পূর্ব পাড় খাড়াবাদ এলাকায় চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। পাইল স্থাপনের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে ভারী সব যন্ত্রপাতি। পুরোদমে পাইল স্থাপন ও পিলার তৈরির কাজ নিয়ে কর্মযজ্ঞ চলছে বহুল প্রত্যাশিত রূপসা রেলসেতু নির্মাণে। কর্মী,  শ্রমিক ও প্রকৌশলীদের কাজের শব্দে মুখর এলাকা। যে যার দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত।

বটিয়াঘাটা উপজেলা পরিষদের প্রধান সহকারী হারুন অর রশীদ বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিদিন আমি রেলসেতু এলাকায় প্রাতঃভ্রমণে যাই। ভারী সব যন্ত্রপাতির কার্যক্রম দেখতে খুব ভালো লাগে। রূপসা নদীর প্রচণ্ড স্রোতের সঙ্গে দিন-রাত যুদ্ধ করে এই নির্মাণ কর্মযজ্ঞ ধাপে ধাপে এগোচ্ছে। রেলসেতু দৃশ্যমান হওয়ায় সারাদিনই কমবেশি মানুষ আসছেন এটি দেখতে।

বুধবার (২৪ অক্টোবর) সকালে রূপসা রেলসেতুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশন ম্যানেজার সুব্রত জানা বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশে প্রথম সুপার স্ট্রাকচারের রেলসেতু এটি। সিঙ্গেল ব্রডগেজের এ সেতুর দৈর্ঘ্য ৫ কিলোমিটার। ৮৩৬টি পাইলের মধ্যে কাজ শেষ হয়েছে ৫৩০টির। পিয়ার ক্যাপ ১৩২টির মধ্যে ৮টির কাজ শেষ হয়েছে। ১৪২টি স্প্যানের মধ্যে দু'টি বসানো হয়েছে। ৫৫০ জন শ্রমিক সেতু নির্মাণে কাজ করছেন। মোট সেতুর ২০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। পুরো কাজ শেষ হবে ২০২০ এর মার্চে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৮
এমআরএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।