বুধবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফেনী পুলিশ সুপার (এসপি) জাহাঙ্গীর আলম সরকার।
তিনি জানান, ঢাকার খিলগাঁও থাকা অবস্থায় সিলেটের সুফিয়া বেগম নামের এক নারীর কাছ থেকে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ২০১১ সালে এক বছর বয়সী প্রিয়াঙ্কাকে দত্তক নেয় শাহেনী।
শাহেনা আরও বলেন, ওই দু’জনের পরামর্শে মেয়েটির গায়ে ছ্যাঁকা দিতেন জ্বিন তাড়ানোর জন্য।
এ ঘটনায় বুধবার সকালে অভিযান চালিয়ে শর্শদি এলাকা থেকে অমৃত কুমার, আবদুল্লাহ ও মুন্নী আক্তার প্রেমা নামে আরও এক মেয়েকে আটক করে পুলিশ। অবশ্য অমৃত ও আবদুল্লাহ বাংলানিউজকে জানায়, তার মেয়েটির গায়ে কখনও ছ্যাঁকা দেয়নি। ছ্যাঁকা দিয়েছে শাহেনী। সে মেয়ের গায়ে আগুনের ছ্যাঁকা দিয়ে আনন্দ পেতেন। এ কারণেই ছ্যাঁকা দিতো।
পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম সরকার বাংলানিউজকে জানান, এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। কোনো মানবাধিকার কর্মী অথবা পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করবে।
এর আগে মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে শিশুটিকে কাঁদতে দেখে জোহরা নামে এক নারী তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। জোহরা জানান, ওই দিন দুপুরে শর্শদী ইউনিয়নের এলাকার পাঠান বাড়ির সংলগ্ন একটি সড়কে ক্ষত-বিক্ষত শরীর নিয়ে কাঁদতে দেখে তাকে বাড়ি নিয়ে যান। পরে স্বামী জাহাঙ্গীর আলমের পরামর্শে তাকে ফেনী সদর হাসপাতালে ভর্তি করায় তারা। মেয়েটি তার নাম প্রিয়াঙ্কা ও মায়ের নাম শাহেনী শুধু এ তথ্য দিতে পেরেছে। এরপর পুলিশের দুটি টিম কয়েক ঘণ্টা অভিযানের পর রাত সাড়ে ১২টার দিকে শর্শদি এলাকার একটি জঙ্গল থেকে নির্যাতনকারী শাহেনীকে আটক করে। এর আগে তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মেয়েটির ওপর নির্যাতনের আলামত হিসেবে কয়েকটি জায়নামাজ খুঁজে পায়।
ফেনী সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত ফয়জুল কবির বাংলানিউজকে বলেন, শিশুটির শরীরে অসংখ্য পোড়া ক্ষত রয়েছে। চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসা দিচ্ছেন। যেহেতু মেয়েটির কোনো স্বজন নেই সেহেতু মেয়েটির দেখা শুনা করছে স্বেচ্চাসেবী সংগঠন ‘সহায়’। সহায়’র প্রধান সমন্বয়ক মঞ্জিলা আক্তার মিমি জানান মেয়েটিকে সার্বক্ষণিক পরিচর্যা করছেন তারা।
বাংলাদেশ সময়: ০৪২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৮
এসএইচডি/আরআইএস/