ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সড়ক অবরোধ করে পরিবহন শ্রমিকদের সমাবেশ 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৮
সড়ক অবরোধ করে পরিবহন শ্রমিকদের সমাবেশ  সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করছেন শ্রমিকরা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: সড়ক পরিবহন আইনের কয়েকটি ধারা পরিবর্তনের দাবিতে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়ক অবরোধ করে সমাবেশ করেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। 

শনিবার (২৭ অক্টোবর) দুপুর ২টা থেকে ফেডারেশনের নেতা ও শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। পরে তারা মিছিলটি নিয়ে বিকেল ৩টায় সড়ক অবরোধ করে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সমাবেশ করেন।

সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করছেন শ্রমিকরা।  ছবি: বাংলানিউজসমাবেশে রোববার (২৮ অক্টোবর) ভোর ৬টা থেকে দেশজুড়ে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি ছাড়াও দাবি মেনে না নেওয়া হলে লাগাতার কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা।  

সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে ‘সড়ক পরিবহন আইন -২০১৮’ পাস হয়েছে। এ আইনে শ্রমিক স্বার্থ রক্ষা ও পরিপন্থী উভয় ধারা রয়েছে। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনাকে দুর্ঘটনা হিসেবে গণ্য না করে, অপরাধ হিসেবে গণ্য করে আইন পাস করা হয়েছে। আইনে সড়ক দুর্ঘটনা মামলায় অপরাধী হয়ে ফাঁসির ঝুঁকি রয়েছে। এমনই অনিশ্চিত ও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পেশায় দায়িত্ব পালন করা শ্রমিকদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। এর কারণে আন্দোলন ছাড়া বিকল্প কোনো আমাদের সামনে খোলা নেই। সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করছেন শ্রমিকরা।  ছবি: বাংলানিউজআইনটি পাস হওয়ার পর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের মহাসড়কগুলোতে পুলিশি নির্যাতন শুরু হয়েছে। গাড়ির কাগজপত্র সঠিক থাকলেও রেকারিঙের নামে হাজার হাজার গাড়ি নগদ জরিমানা গুনছে। আমাদের দাবি না মানলে লাগাতার কর্মবিরতি চলবে জানান তারা।  

এছাড়া পরিবহন শ্রমিকদের পক্ষ থেকে আট দফা দাবি তুলে ধরা হয়। সমাবেশে ‘ফাঁসির রশি গলায় নিয়ে আমরা গাড়ি চালাবো না’ সহ বিভিন্ন স্লোগান সমৃদ্ধ পোস্টার-ব্যানার লক্ষ্য করা গেছে। তাছাড়া অনেকে শরীরের উপর রঙ দিয়ে দাবি লিখে সমাবেশে অংশগ্রহণ করেছেন।

সংগঠনটির সহ-সভাপতি ছাদিকুর রহমান হিরুর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক উছমান আলী, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুর রহিম বক্স দুদু, ঢাকা মহানগর সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. আলী সোবাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা প্রায় হাজার অধিক পরিবহন শ্রমিকরা। অনেক শ্রমিক এভাবে শরীরের রঙ দিয়ে দাবিগুলো লিখেছেন।  ছবি: বাংলানিউজএদিকে প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তার একপাশ অবরোধ করে সমাবেশ করায় ভোগান্তিতে পড়েছেন জনসাধারণ। পল্টন মোড় থেকে গাড়ি ঢুকতে না পারায় কাকরাইলের দিকে অধিক গাড়ির চাপে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট।  

বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা সোহেলুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, অফিস থেকে বের হয়ে মতিঝিল থেকে এক ঘণ্টা লেগেছে পল্টন মোড়ে আসতে। জ্যাম এখনও আছে। শুনলাম প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন হচ্ছে। যাবো মিরপুরে। কখন বাসায় পৌঁছাতে পারবো তা সৃষ্টিকর্তা জানেন। আবার কাল যদি পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয় তাহলে শুরু হবে আরেক ভোগান্তি। সাধারণ জনগণের এসব ভোগান্তির প্রতি সরকারের নজরদারি বাড়ানো উচিত। আবার সকাল থেকে রাস্তায় গাড়ি কম ছিল এই সমাবেশের জন্য।  

এর আগে গত ৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদে সদ্য পাস হওয়া সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনসহ সাত দফা দাবিতে পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা ধর্মঘট শুরু হয়েছিল। (৯ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছিল ট্রাক পরিবহন শ্রমিকরা। শুক্রবার (২৬ অক্টোবর) কেরানীগঞ্জে ট্রাকচালক-শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক শ্রমিক নিহত হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবার একই দাবি নিয়ে ফুসে উঠেছে পরিবহন শ্রমিকরা এবং এই কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৮
এমএএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।