কিন্তু কর্মবিরতির নামে নৈরাজ্য চালাচ্ছেন পরিবহন শ্রমিকরা। নিজেরা গণপরিবহন চালানো বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি পয়েন্টে পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে তারা থামিয়ে দিচ্ছেন সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ যাত্রীদের চলাচলের বিকল্প বাহনও।
রাজধানীর ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, সাতরাস্তা, মহাখালী, মিরপুর, ধানমন্ডি, উত্তরা, যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ব্যক্তিগত গাড়ি ছাড়া রাস্তায় কোনো গণপরিবহনেরই দেখা মিলছে না। মাঝেমধ্যে কিছু সিএনজিচালিত অটোরিকশার দেখা মিললেও তারা দাবি করছে ‘গলাকাটা’ ভাড়া। আবার এই ভাড়ায় গাড়িতে চেপে বসলেও পরিবহন শ্রমিকরা তাদের নামিয়ে দিচ্ছেন।
পরিবহন না পেয়ে মানুষকে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে। বিশেষ করে নারী ও বয়স্কদের পড়তে হয়েছে বেশি ভোগান্তিতে। মিরপুর থেকে বারিধারায় শেয়ারিং রাইড নিয়ে আসা মতিয়ার নামে এক রাইডার বাংলানিউজকে বলেন, সরকার আইন করেছে যেন শৃঙ্খলার মধ্যে থাকে সবকিছু। কিন্তু তারা (পরিবহন মালিক-শ্রমিক) পেয়েছেন মামা বাড়ির আবদার, অন্যায়ও করবেন, আইনও মানবেন না। সরকারের উচিত এদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়া।
এদিকে, রাজধানীর রাস্তায় যেমন চলছে না যানবাহন, তেমনি ঢাকা থেকে দূরপাল্লার কোনো গাড়ি ছেড়েও যেতে পারছে না, ঢুকতেও পারছে না ঢাকায়। এর আগে শনিবার (২৭ অক্টোবর) শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি সংসদ সদস্য ওয়াজিউদ্দিন খান ও সাধারণ সম্পাদক উছমান আলী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে ‘সড়ক পরিবহন আইন -২০১৮’ পাস হয়েছে। এ আইনে শ্রমিক স্বার্থ রক্ষা ও পরিপন্থী উভয় ধারা রয়েছে। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনাকে দুর্ঘটনা হিসেবে গণ্য না করে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে আইন পাস করা হয়েছে। আইনে সড়ক দুর্ঘটনা মামলায় অপরাধী হয়ে ফাঁসির ঝুঁকি রয়েছে। এমনই অনিশ্চিত ও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পেশায় দায়িত্ব পালন করা শ্রমিকদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। এর কারণে আন্দোলন ছাড়া বিকল্প কোনো আমাদের সামনে খোলা নেই।
এ আইনের সংশোধন ও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে রোববার সকাল ৬টা থেকে দেশজুড়ে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয় প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৮
এসআইএস/এইচএ/