মহাখালী বাস টার্মিনালে দাঁড়িয়ে সাড়ে ৯টার দিকে হালিমা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, পরিবহন কর্মবিরতি চলছে জানতাম না। জানলে হয়তো এই দুর্ভোগে পড়তে হতো না।
‘সড়ক পরিবহন আইনের কয়েকটি ধারা বাতিল, পুলিশি হয়রানি বন্ধ’সহ আট দফা দাবিতে রোববার (২৮ অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে দেশজুড়ে ৪৮ ঘণ্টার ‘কর্মবিরতি’ পালন করছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। রাজধানীসহ সারাদেশে পরিবহন না চলায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন কর্মস্থলগামী মানুষ ও স্কুল-কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীরা।
দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষার পর পরিবহনের দেখা না পেয়ে হালিমার মতো অনেকেই পায়ে হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হন। বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা আসিফ আহমদ বলেন, গাড়ি পাওয়া যাবে না ভেবে সকাল সকাল বাসা থেকে অফিসের উদ্দেশে বেরিয়েছি। এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও কোনো গাড়ির দেখা পাইনি। তাই বাধ্য হয়েই পায়ে হেঁটে মতিঝিল যাচ্ছি।
এদিকে গণপরিবহন না চলায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশার ভাড়া বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। যাত্রীরা এটাকে ‘গলাকাটা’র সমান বললেও রিকশাচালক হালিম বলেন, দিনের অন্য সময় কম ভাড়ায় চলি, একদিন বেশি দিলে কী সমস্যা হয়?
শনিবার (২৭ অক্টোবর) শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি সংসদ সদস্য ওয়াজিউদ্দিন খান ও সাধারণ সম্পাদক উছমান আলী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে ‘সড়ক পরিবহন আইন -২০১৮’ পাস হয়েছে। এ আইনে শ্রমিক স্বার্থ রক্ষা ও পরিপন্থী উভয় ধারা রয়েছে। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনাকে দুর্ঘটনা হিসেবে গণ্য না করে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে আইন পাস করা হয়েছে। আইনে সড়ক দুর্ঘটনা মামলায় অপরাধী হয়ে ফাঁসির ঝুঁকি রয়েছে। এমনই অনিশ্চিত ও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পেশায় দায়িত্ব পালন করা শ্রমিকদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। এর কারণে আন্দোলন ছাড়া বিকল্প কোনো আমাদের সামনে খোলা নেই।
এ আইনের সংশোধন ও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে রোববার সকাল ৬টা থেকে দেশজুড়ে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয় প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৮
ইএআর/এইচএ/