ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রাজশাহীতে পরিবহন কর্মবিরতি: প্রথম দিনেই চরম দুর্ভোগ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৮
রাজশাহীতে পরিবহন কর্মবিরতি: প্রথম দিনেই চরম দুর্ভোগ পরিবহন কর্মবিরতি

রাজশাহী: সড়ক পরিবহন আইনের কয়েকটি ধারা পরিবর্তনের দাবিতে রোববার (২৮ অক্টোবর) সকাল ছয়টা থেকে রাজশাহীতে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন কর্মবিরতি চলছে। 

জানা যায়, রাজশাহী থেকে ছেড়ে যায়নি কোনো দূরপাল্লার বাস। বন্ধ রয়েছে আন্তঃজেলা রুটের বাসও।

এতে ধর্মঘটের শুরুতেই সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। এরই মধ্যে সড়ক পথে বিভাগীয় শহর রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তবে শহরের ভেতরে অন্যান্য যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।  

স্থানীয় পরিবহন নেতারা জানান, সারাদেশে একযোগে শুরু হওয়া ধর্মঘটের সঙ্গে তারা একাত্মতা প্রকাশ করে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। ৪৮ ঘণ্টা এ ধর্মঘট চলবে।  

সকাল থেকে শুরু হওয়া পরিবহন ধর্মঘটের প্রথম দিনেই অচল হয়ে পড়েছে রাজশাহী। দূর-দূরান্তে নিজ নিজ গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দিয়েও যানবাহন না পেয়ে পথে পথে যাত্রীদের নানান হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।  

সরেজমিনে দেখা যায়, রাজশাহীর শহীদ এএইচএম কামরুজ্জামান বাস টার্মিনাল, ঢাকা বাস টার্মিনাল ও নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল থেকে সকাল ৬টার পর কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। সকাল থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার উদ্দেশে মহানগরীর শিরোইল, ভদ্রা ও রেলগেট বাসস্ট্যান্ডে সাধারণ যাত্রীদের অপেক্ষা করতে দেখা যাচ্ছে। বাস না পেয়ে বিকল্প যানবাহনে গন্তব্যে রওনা হচ্ছেন অনেকে।  

অনেককে আবার রাজশাহী রেলস্টেশনে ভিড় করতে দেখা যাচ্ছে। ধর্মঘটের ফলে চাপ পড়েছে ট্রেনে। তবে সাপ্তাহিক বন্ধ থাকায় রোববার সকালে রাজশাহী থেকে ঢাকার কোনো আন্তঃনগর ট্রেন নেই। এতে আরও দুর্ভোগে পড়েছেন রাজধানীমুখী যাত্রীরা। তবে অন্যান্য রুটের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক থাকায় সিট না পেলেও স্ট্যান্ডবাই টিকেট নিয়ে রওনা দিচ্ছেন সাধারণ যাত্রীরা।  

এছাড়া রাজশাহী থেকে রংপুর, কুড়িগ্রাম, বগুড়া, নাটোর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে বিআরটিসি বাস চলাচল করায় ভুক্তভোগীরা মহানগরীর কুমারপাড়া ডিপো ও রেলগেট বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করছেন। তবে সব সময় বিআরটিসির বাস না থাকায় এবং বিআরটিসির বাস কম থাকায় দুর্ভোগ কাটছেনা। ফলে মাইক্রোবাস, সিএনজি ও দূরের যাত্রার জন্য রেলপথকেই বেছে নিচ্ছেন অনেকে।    

রাজশাহীর শিরোইলে রফিকুল ইসলাম বলেন, সকালে জরুরি কাজে তার ঢাকা যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু টার্মিনালে আসার পরে তিনি জানতে পারেন পরিবহন ধর্মঘট চলছে। বিকল্প হিসেবে তিনি দুপুরের ট্রেনে ঢাকা যাওয়ার কথা ভাবছিলেন। কিন্তু স্টেশনে গিয়ে দেখেন দুপুরের ট্রেনেও টিকিট নেই। যেতে হবে রাতের ট্রেনে। এ সময় পরিবহন শ্রমিকদের আকস্মিক ধর্মঘটকে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে এ দুর্ভোগের জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।   

ফাতেমা জাহান নামের অপর এক নারী যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, সকালে ঢাকা যাওয়ার জন্য গত ২৬ অক্টোবর আগাম টিকেট কেটেছেন তিনি। টিকিটে মোবাইল নম্বর ছিল। তবুও বাস চলাচল না করার কথা কাউন্টার থেকে জানানো হয়নি। সকাল ৯টায় এসে দেখেন বাস চলাচল বন্ধ। কাউন্টার থেকে টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পরিবহন ধর্মঘটের প্রতিবাদ জানিয়ে বাস কাউন্টারের মধ্যে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি।   

রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কামাল হোসেন রবি জানান, রোববার সকাল থেকে দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। মালিক সমিতি এবং মোটরশ্রমিক ইউনিয়ন ও ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নসহ শ্রমিক সংগঠনগুলোর সিদ্ধান্তে রাজশাহীতেও এই ধর্মঘট চলছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৮
এসএস/এএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।