সোমবার (২৯ অক্টোবর) সকালে খুলনার সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল এলাকায় পরিবহন শ্রমিকদের বাধার মুখে পড়া তৈয়ব নামের ইজিবাইকের এক যাত্রী একথা বলেন।
তিনি বলেন, পরিবহন শ্রমিকদের ডাকে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতিতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘পরিবহন শ্রমিকরা মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়। উত্তেজিত পরিবহন শ্রমিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে গাড়ি ভাংচুর চালাতে যায়। চালক ও যাত্রীদের মারধর করতে যায়। এটা কেমন আন্দোলন। ’
সরেজমিনে দেখা গেছে, খুলনার আন্তঃজেলা সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল থেকে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার কোনো বাস ছাড়ছে না। সারি-সারি দাঁড়িয়ে আছে বাসগুলো। শিববাড়ি ও রয়্যালের মোড়ের বাস কাউন্টারগুলোর সামনে কোনো বাস নেই। কাউন্টারগুলো প্রায় বন্ধ। কর্মবিরতির প্রথমদিনের মতো স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের বহনকারী মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার চলাচলেও বাধা দিচ্ছে শ্রমিকরা। সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল এলাকা ও জিরো পয়েন্ট এলাকায় রাস্তায় লাঠিসোটা হাতে নিয়ে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করছে শ্রমিকরা। অবরোধকারীরা অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখছে। এতে রোগীরা চরম শঙ্কটাপন্ন অবস্থায় চলে যাচ্ছেন। বিভিন্ন রাস্তায় বাস রেখে, গাছ ফেলে দড়ি টানিয়ে আটকে রাখছে।
খবর নিয়ে জানা গেছে, পরিবহন শ্রমিকদের আকস্মিক কর্মবিরতিতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন একদিকে যেমন সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে পণ্য পরিবহন করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা।
এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। তারা বলছেন, আইন বাতিলের জন্য যাত্রী ও ব্যবসায়ীদের জিম্মি করতেই গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন শ্রমিকরা। এর আগেও বিভিন্ন দাবিতে এভাবেই গাড়ি চলাচল বন্ধ করেছেন শ্রমিকরা। অযৌক্তিক এ পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহারেরও দাবি জানিয়েছেন তারা।
রয়্যালের মোড়ের দিদার পরিবহনের বাস কাউন্টারের বুকিং সহকারী ইলিয়াস হোসেন বলেন, পরিবহন শ্রমিকদের ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের গাড়ি ছাড়তে নিষেধ আছে।
সৌদিয়া, হানিফ পরিবহনের বুকিং সহকারীরা একই কথা বলেন।
নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর খুলনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইকবাল হোসেন বিপ্লব বাংলানিউজকে বলেন, ‘হরতালের চেয়েও ভয়াবহ অনৈতিক এ পরিবহন ধর্মঘট। অবরোধকারীরা অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখায় পথিমধ্যেই অসুস্থ হয়ে শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শ্রমিকরা চালক ও ছাত্রীদের গায়ে কালি নিক্ষেপ করেছে। যা কোনো হরতালেও ঘটেনি। ’
ধর্মঘট ডেকে যারা মানুষকে জিম্মি করছে তাদের মুখোশ উন্মোচন করে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৮
এমআরএম/আরআর