ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শেয়ারের সিএনজি অটোরিকশাই মূল ভরসা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৮
শেয়ারের সিএনজি অটোরিকশাই মূল ভরসা শেয়ারে চলছে সিএনজি অটোরিকশা/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বাবা আনিসুল হকের সঙ্গে সিএনজি অটোরিকশায় করে স্কুলে যাচ্ছে আমেনা হক। মিরপুর-১০ নম্বরে তাদের অটোরিকশা আসতেই হাত তুলে সামনে দাঁড়িয়ে গেলেন ষাটোর্ধ্ব ইউসুফ হোসেন। সবার গন্তব্য মিরপুর বাংলা কলেজের আশপাশে। চালক ১শ টাকা ভাড়া চাইতেই চট করে ওঠে পড়লেন ইউসুফ।

ফার্মগেট থেকে মিরপুর-১০ নম্বরে এসে দাঁড়ালো উত্তরাগামী আরেকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা। ভেতর থেকে নেমে এলো এক কিশোর।

চালকের হাতে ৫০ টাকার নোট গুঁজে দিয়ে হেঁটে চলে গেলো। পেছনের সিটে তিনজন বসে আছেন। কিশোরটি বসে ছিল চালকের বাঁ পাশে। ডান পাশে আরো একজন আছেন। এবার বাঁ পাশে ১৫০ টাকায় উত্তরার এক যাত্রী তুলে ছুটে গেলো অটোরিকশা।

চলমান পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতির দৃশ্যপট এটা। শ্যাওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, মিরপুর-২ ও ১০ নম্বর গোলচত্বরসহ আশপাশের এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই বেশি চোখে পড়েছে।

সড়কে কোনো পাবলিক, প্রাইভেট ট্রান্সপোর্ট তথা টাউন সার্ভিস নেই। অগত্যা কাছের গন্তব্যের ভরসা নিজের পা দু'খানা। দূরের হলে ঘণ্টার ঘণ্টার পর দাঁড়িয়ে থাকা। দু'একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা যা আসছে, তাতেও অনেকের ভাড়ায় পোষায় না। ফলে আবার অপেক্ষা। দু'চারজন জোট হয়ে অটোরিকশা ডেকে নিচ্ছেন। অনেকেই রিকশায় ভেঙে ভেঙে গন্তব্যের দিকে যাচ্ছেন। তবে ভাড়া কিন্তু বেশ চড়া। তারওপর রিকশার সংখ্যাও যাত্রীর তুলনায় কম।

বিভিন্ন স্পট ঘুরে দেখা যায়, নারী, শিক্ষার্থী, বয়স্ক মানুষের চোখে-মুখে বিরক্তির ছাপ। তাদের কষ্টটাও সীমাহীন। আর চাকরিজীবীরা কিছুদূর হেঁটে, অপেক্ষায় থেকে, বিভিন্ন উপায়ে কর্মস্থলের দিকে যাচ্ছেন।

উত্তরার একটি বায়িং হাউজে কাজ করেন মোবারক হোসেন। বাংলানিউজকে বলেন, তালতলা হেঁটে হেঁটে মিরপুর-১০ নম্বর পর্যন্ত এলাম। এভাবে আর সম্ভব হচ্ছে না। সিএনজিও পাওয়া যাচ্ছে না। এই কর্মবিরতির ভোগান্তি কেবল আমজনতার। এটার ফল ভালো হবে না।  

এদিকে অনেককেই পাঠাও, উবার, ওভাই, সহজসহ বিভিন্ন অ্যাপভিত্তিক পরিবহন সেবার দিকেও ছুটতে দেখা গেলো। তবে অ্যাপ ড্রাইভারদের অনেকেই সিস্টেমে যাত্রী নিচ্ছে না। অফলাইনে থেকে যাত্রী নিচ্ছেন। তবে যাত্রীদের এ নিয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। বাইকার দেখলেই তারা ছুটে এসে জিজ্ঞেস করছেন-ভাই, যাবেন? এরপর দর কষাকষি করেই রফা করছেন উভয়ে। এতে অবশ্য যাত্রী ছাড়ের টাকা গচ্চা দিয়েই গন্তব্যে যাচ্ছেন।

অন্যদিকে অপ্রতুল গাড়ি, বিধায় চাহিদা বেশি। এ সুযোগে চালকদের অনৈতিক অতিরিক্ত ভাড়া দাবির বিষয়টি অনেকেই মানতে পারছে না। অনেককেই বাইকার কিংবা সিএনজি অটোরিকশা চালকদের সঙ্গে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৮
ইইউডি/এএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।