ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মা ইলিশ রক্ষায় বরিশালে বেড়েছে জেল-জরিমানা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৮
মা ইলিশ রক্ষায় বরিশালে বেড়েছে জেল-জরিমানা

বরিশাল: প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ শিকার বন্ধের অভিযান শেষ হয়েছে রোববার (২৮ অক্টোবর) মধ্যরাতে। বরিশাল জেলার পাশাপাশি বিভাগের বাকি পাঁচ জেলায় মৎস্য কার্যালয়ের নেতৃত্বে চলে টানা ২২ দিনের অভিযান। 

যেখানে মৎস্য অধিদফতরকে সহায়তা করেছে কোস্টগার্ড, পুলিশ, নৌ-পুলিশ, র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে মা ইলিশ শিকারের দায়ে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় ৯৬১ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পাশাপাশি ২০ লাখ ৯০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে এবং প্রায় আট মেট্রিক টন ইলিশ ও ২৯ দশমিক ৭০ লাখ মিটার অবৈধ কারেন্টজাল জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য অধিদফতর বিভাগীয় কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক আজিজুল হক।

তিনি জানান, গত ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর মধ্যরাত পর্যন্ত বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় মৎস্য অধিদফতরের নেতৃত্বে মোট ১ হাজার ৯০০ টি অভিযান ও ৯৮৬ টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। যার অনুকূলে ৯৩৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি এ পর্যন্ত বেশ কিছু নৌকা ও ট্রলার জব্দ করা হয়েছে।

সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের হিসেব অনুযায়ী গত বছরের চেয়ে এবার ভ্রাম্যমাণ আদালত, আটক, জেল-জরিমানার পরিমাণ বাড়লেও বাড়েনি অভিযানের সংখ্যা। পাশাপাশি কমেছে জাল ও ইলিশ জব্দের পরিমাণ।

গত বছর বরিশাল বিভাগে মোট দণ্ডপ্রাপ্ত জেলের সংখ্যা ছিল ৫৩৩ জন, যা এবছর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৬১ জন। পাশাপাশি গত বছরের চেয়ে এ বছর তিন লাখ ৮১ হাজার টাকা বেশি জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

আবার জব্দের তালিকায় গত বছরের চেয়ে দুই মেট্রিক টন ইলিশ কম জব্দ করা হয়েছে। পাশাপাশি ২২ দিনের এ অভিযানে গত বছর থেকে ১০ দশমিক ৬১ লাখ মিটার কম অবৈধ জাল জব্দ করা হয়েছে। এ বছর জব্দ করা অবৈধ জালের পরিমাণ ছিল ২৯ দশমিক ৭০ লাখ মিটার যার পরিমাণ গত বছর ছিল ৪০ দশমিক ৩১ লাখ মিটার।

গত বছরের তুলনায় এ বছর ১৯২ টি অভিযান কম হলেও ১৮ টি ভ্রাম্যমাণ আদালত ও ২৩০টি মামলা বেশি দায়ের করা হয়েছে। গত বছর অভিযান হয়েছিল দুই হাজার ৯২টি, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়েছিলো ৯৬৮টি ও মামলা হয়েছিলো ৭০৫টি।

এদিকে বরিশাল বিভাগের মধ্যে এ বছর সবচেয়ে বেশি ৬৭৬টি অভিযান পরিচালনা করেছে বরিশাল জেলা। আর জেল-জরিমানার দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে ভোলা জেলা। যেখানে ৩১৮ টি অভিযান, ১৯৪ টি মোবাইল কোর্ট ও  ২৫৪ টি মামলার মাধ্যমে ৪৩২ জন জেলেকে জেল ও নয় লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কার্যালয়ের কর্মকর্তা (হিলসা) বিমল চন্দ্র দাস বাংলানিউজকে বলেন, মূলত নদীতে মাছ বেশি থাকায় অসাধু জেলেরা ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞার সময় নেমে থাকেন। এ বছর মৎস্য বিভাগ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সুষ্ঠু ও সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আইন অমান্যকারীদের আটক করেছে।

মৎস্য অধিদফতর বরিশালে বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. ওয়াহিদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, জেলে ও সাধারণ মানুষ বিগত সময়ের থেকে অনেকটাই সচেতন। তাদের সঙ্গে সঙ্গে মৎস্য বিভাগের প্রতিটি সদস্য ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সমন্বিতভাবে নদী-সাগর পাহারা দিয়েছে। এতে জাতীয় মাছ ইলিশ রক্ষায় সর্বোচ্চ নজরদারি রাখা হয়েছে, কাউকে সুযোগ দেওয়া হয়নি।  

এবার জাটকা নিধন বন্ধে কঠোর নজরদারী রাখা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ শিকার বন্ধের পাশাপাশি জাটকা নিধন বন্ধ না করা গেলে ইলিশের পরিমাণ বাড়বে না। তাই ইলিশের পরিমাণ বাড়াতে হলে জাটকা নিধন বন্ধ করতেই হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৮
এমএস/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।