প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে ২০১৬ সালে ১ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়া ইউনির্ভাসিটির মহাফেজখানা (আর্কাইভ) থেকে পাঠানো নকশাগুলো হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছায়।
লুই আই কানের নকশা ভেঙে সংসদ ভবন এলাকায় বেশ কয়েকটি স্থাপনা বিভিন্ন সময়ে নির্মিত হয়। মূল নকশা পাওয়ার পর সেগুলো সরানো হবে বলে এর আগে জানিয়েছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
২০১৪ সালে সংসদ ভবনের স্থপতি লুই আই কানের প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সংসদ ভবনের মূল নকশা আনার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পর লুই আই কানের প্রতিষ্ঠান ডেভিড অ্যান্ড উইজডম-এর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে স্থাপত্য অধিদপ্তর। নকশাগুলো পেনসিলভেনিয়া ইউনিভার্সিটির আর্কিটেকচারাল আর্কাইভে থাকায় সরকারের পক্ষ থেকে সেখানেও যোগাযোগ করা হয়।
প্রসঙ্গত, সংসদ এলাকায় সাতটি কবর রয়েছে। সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুস সাত্তার, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজুর রহমান ও আতাউর রহমান খান, সাবেক মন্ত্রী মশিউর রহমান যাদু মিয়া, মুসলিম লীগ নেতা খান এ সবুর, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক আবুল মনসুর আহমদ এবং পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের স্পিকার তমিজউদ্দীন খানের কবর রয়েছে সেখানে।
সংসদ এলাকার পাশে চন্দ্রিমা উদ্যানে রয়েছে জিয়াউর রহমানের কবর। ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় জিয়া নিহত হওয়ার পর প্রথমে তাকে চট্টগ্রামে সমাহিত করা হয়েছিল। পরে সেখান থেকে কবর তুলে আনা হয় ঢাকায়।
এছাড়া লুই আই কানের নকশা ভেঙে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বাড়িও নির্মাণ করা হয়েছিল বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে। উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তখন ভবন দুটি তৈরি হয়। এ সংক্রান্ত একটি মামলা এখনও বিচারাধীন। কয়েক বছর আগে সংসদ ভবনের চারপাশে নিরাপত্তা বেষ্টনি নির্মাণ নিয়ে সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে স্থপতি লুই আই কানের করা মূল নকশা আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৯৬১ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খানের আমলে বর্তমান সংসদ ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সে সময় স্থপতি মাজহারুল ইসলামকে এ ভবনের স্থপতি নিয়োগ করা হয়। তার প্রস্তাবেই লুই কান এই প্রকল্পের প্রধান স্থপতি হিসেবে নিয়োগ পান। ১৯৮২ সালের ২৮ জানুয়ারি দৃষ্টিনন্দন এ স্থাপনার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তীতে লুই আই কান কয়েকবার বাংলাদেশে কাজের জন্য আসেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মূল নকশা সংশ্লিষ্ট কিছু ‘প্ল্যান’ তিনি হস্তান্তর করতে পারেননি। পরে এ নিয়ে কোনো সরকার আগ্রহ দেখায়নি।
২০১৩ সালের ২ জুন সংসদ কমিশনের বৈঠকে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদ ভবন সংরক্ষণে মূল নকশার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয় এমন কিছু নির্মাণ না করার বিষয়ে মত দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৮
এসএম/এমজেএফ