সোমবার (২৯ অক্টোবর) রাতে দশম জাতীয় সংসদের ২৩তম অধিবেশনের সমাপনী দিনে ও দশম সংসদের শেষ অধিবেশনে নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা (এমপি)।
দশম সংসদের ২৩তম অধিবেশনের সমাপনী সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতির আদেশ পাঠ করে শোনানোর আগে স্পিকার বক্তব্য রাখার সুযোগ দেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ এবং স্বতন্ত্র এমপি ডা. রুস্তম আলী ফরাজীকে।
আরও পড়ুন>>
** সংসদে বিদায়ের সুর, এমপিদের মুখে সফলতার জয়গান
এ সময় রাশেদ খান মেনন বলেন, বিগত নবম সংসদের অভিজ্ঞতা ছিল অত্যন্ত করুণ। সেই নির্বাচনে পরাজিত হবার পর বিএনপি-জামায়াত দেশে তাণ্ডব চালিয়েছিলো। তখন হেফাজতকে সঙ্গে নিয়ে তাণ্ডবের চেষ্টা করা হয়। শুধু তাই নয়, দশম সংসদ নির্বাচন বানচালের নামে আগুন সন্ত্রাস ও তাণ্ডব চালানো হয়।
‘পেট্রোল দিয়ে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। তারা এই দশম সংসদকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য নানা চক্রান্ত করেছে, কিন্তু বিশ্ববাসী এই দশম সংসদকে গ্রহণ করেছে। সিপিএ ও আইপিইউ এর প্রধান নির্বাচিত করায়-ই তার প্রমাণ। ’
তিনি বলেন, গত নবম সংসদের সময় যে উন্নয়নের ধারা সূচিত হয়েছিল এই সংসদের সময় তা অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে গেছে। এদিকে আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবার নানা রকম চক্রান্ত শুরু হয়েছে।
‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে আলোচনার জন্য চিঠি পাঠিয়ে যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সেটা প্রধানমন্ত্রী গ্রহণ করেছেন। যদিও গত নির্বাচনের আগে লাল টেলিফোনে ফোন করেও তিনি সাড়া পাননি। সেদিন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র কোকোর মরদেহ দেখতে গিয়েও ফিরে এসেছেন। তারপরেও প্রধানমন্ত্রী যে আলোচনার সম্মতি দিয়েছেন এটা রাজনীতিতে ইতিবাচক বলে মনে করি। তবে আলোচনা হতে হবে সংবিধানের ভেতর থেকে এবং সিদ্ধান্ত নিতে হবে সংবিধানের ভেতর থেকে এর বাইরে কিছু হবে না। ’
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, নবম সংসদের ধারাবহিকতায় দশম সংসদেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনন্য ভূমিকা পালন করেছেন। দুর্যোগ ও অন্ধকার থেকে দেশকে টেনে তুলে আলোর পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি। নবম জাতীয় সংসদ থেকেই জঞ্জাল পরিষ্কার, বিচারহীনতার হাত থেকে দেশকে রক্ষা এবং দুর্বল অর্থনীতিকে শক্তিশালী পথে টেনে তুলেছেন।
তিনি বলেন, ঐক্যফ্রন্টের মুখ হচ্ছে ড. কামাল আর মুখোশ হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত। তাদের সাত দফার মধ্যেই নির্বাচন বানচালের চক্রান্ত জড়িত। নির্বাচন লক্ষ্য নয়, খালেদা-তারেকসহ সব অপরাধীদের রাজনীতিতে পুনর্বাসনই তাদের উদ্দেশ্যে। এদের একচুল ছাড় দেওয়া চলবে না বরং চক্রান্ত শক্তহাতে দমন করতে হবে। শেখ হাসিনার বিকল্প কখনই আগুন সন্ত্রাসের মাতা খালেদা জিয়া নন।
জাতীয় সংসদ চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ বলেন, দশম সংসদ ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে। এখানে বিরোধী দল সংসদে উপস্থিত থেকে সব কার্যক্রমে সহযোগিতা করেছেন। এই সংসদ ইতিহাসের অনন্য উচ্চতায় লিপিবব্ধ থাকবে।
ডা. রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, এই সংসদ রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন এনেছে। এই সংসদে সরকারি দল বিরোধী দলকে ও বিরোধী দল সরকারি দলকে গালিগালাজ করেনি। ভবিষতে এই সংসদকে উদাহরণ হিসেবে নিতে হবে। এই সংসদ সফল সংসদ।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত হয় বর্তমান দশম সংসদ। এ সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয় ওই বছরের ২৯ জানুয়ারি। যা শেষ অধিবেশন অর্থাৎ ২৩তম অধিবেশন শেষ হয় ২৯ অক্টোবর।
এই সংসদে ১৫জন সংসদ সদস্য পরলোক গমন করেছেন। দশম সংসদে মোট ৪১০ কার্য দিবসে ১৯৩টি আইন পাস হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৮
এসকে/এসএম/এমএ