ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মেয়াদ বাড়ছে পদ্মাসেতুর, বাড়ছে ব্যয়ও

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৮
মেয়াদ বাড়ছে পদ্মাসেতুর, বাড়ছে ব্যয়ও পুরোদমে এগিয়ে চলছে পদ্মাসেতুর কাজ। ছবি: সাজ্জাদ হোসেন

ঢাকা: স্বপ্নের পদ্মাসেতু প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় দুটোই বাড়ছে। তৃতীয় দফায় এ প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ছে আরো এক বছর সঙ্গে ব্যয়ও বাড়ছে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।

২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এ প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগে (আইএমইডি) পাঠিয়েছে সেতু বিভাগ।

সূত্র মতে, পদ্মাসেতুর কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে।

কথা ছিলো চলিত বছরের ডিসেম্বরে পদ্মাসেতু সবার জন্য উন্মুক্ত করার। সেই হিসেবে হাতে সময় আছে মাত্র দুই মাস। কিন্তু জিও টেকনোলজি ইনভেস্টিগেশনে পদ্মার তলদেশে মাটির যে গুণাগুণ পাওয়া যায়, বাস্তবে তার সঙ্গে কোনো মিল পাওয়া যায়নি। বরং নদীর তলদেশের গভীরে মাটির নরম স্তরের ভিন্নরূপ দেখা গেছে। ফলে ৪২টি পিলারের মধ্যে ২২টি পিলারের নতুন নকশা করতে হয়েছে। এগুলোর পাশাপাশি প্রকল্পটির পাঁচটি কম্পোনেন্টের মধ্যে নদীশাসনের কাজ ব্যহত হচ্ছে। আর তাই এই প্রকল্পের মেয়াদ আরো এক বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়।  

পদ্মাসেতুর মেয়াদ বৃদ্ধি প্রসঙ্গে আইএমইডি’র এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, কয়েকটি কারণে পদ্মাসেতুর মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে সেতু বিভাগ। কারণগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে। আমরা সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটা বৈঠকও করেছি।

সেতু বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) ওবায়দুল হক বাংলানিউজকে বলেন, মূলকথা সেতুর নকশায় ভুল ছিলো। প্রথমে যথাযথভাবে নকশা করা হয়নি। কারণ সংযোগ সড়কের নকশা এবং মূল সেতুর নকশা এক নয়। এজন্য সেতুর মেয়াদ বৃদ্ধি করা হচ্ছে। আশা করছি এই মেয়াদে সেতুর কাজ সম্পন্ন করতে পারবো।  

তিনি আরো বলেন, প্রথমে যে মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছিলো এটাই ভুল ছিলো। পদ্মাসেতু নির্মাণ একটি চ্যালেঞ্জিং প্রকল্প। এই সেতুর কাজের মেয়াদ এতো কম ধরা ঠিক হয়নি। আরো বেশি মেয়াদ ধরা উচিত ছিলো। পদ্মার স্রোত নির্ণয় করাও কঠিন। বর্ষা মৌসুমে কাজ করা যায় না। শুধু মাত্র ড্রাই সিজনে আমরা কাজ করতে পারি।

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে একনেক ১০ হাজার ১৬১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে পদ্মাসেতু প্রকল্পটি অনুমোদন করেছিল। পরে নকশা পরিবর্তন হয়ে দৈর্ঘ্য বেড়ে যাওয়ায় নির্মাণ ব্যয়ও বেড়ে যায়। ২০১১ সালে ২০ হাজার ৫০৭ কোটি ২০ লাখ টাকার সংশোধিত প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পায়। ২০১৬ সালে আবারো ৮ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ায়। সব মিলে ব্যয় দাঁড়ায় ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। তার সঙ্গে নতুন করে আরো ১৪’শ কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

সেতু বিভাগ জানায়, মূল ডিপিপি’তে ১ হাজার ৫৩০ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ব্যয় প্রাক্কলন ছিলো ১ হাজার ২৯৯ কোটি টাকা। কিন্তু এখন মোট ভূমি অধিগ্রহণ করতে হবে ২ হাজার ৬৯৮ হেক্টর। অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহণে পদ্মাসেতু প্রকল্পে ভূমিসহ অধিগ্রহণ বাবদ আরো এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা প্রয়োজন। সময়-ব্যয় বৃদ্ধির ফলে আবারো সংশোধন করতে হবে পদ্মাসেতু প্রকল্পে।

বাংলাদেশ সময়: ০৩৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৮
এমআইএস/এমএফআই/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।