বুধবার (৩১ অক্টোরব) দুপুরে খুবির ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে কবি জীবনানন্দ দাশ শিক্ষাভবনের মাল্টিপারপাস কক্ষে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক ও জন ইতিহাস চর্চা কেন্দ্রের সভাপতি প্রফেসর ড. মেসবাহ কামাল।
জন ইতিহাস চর্চা কেন্দ্রের সভাপতি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমকালীন বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত, বৃহত্তম, কঠিন ও জটিল সমস্যা। এটি মিয়ানমার সরকার, সেনাবাহিনী ও উগ্রবাদী বৌদ্ধদের সুপরিকল্পিত নীল নকশা, যার সঙ্গে বাংলাদেশের একাত্তর সালের গণহত্যাসহ অনেক কিছুর মিল রয়েছে। এখানে মানবিক মর্যাদা, অধিকার, আন্তর্জাতিক রীতি-নীতি সবকিছুই ভূ-লুণ্ঠিত হয়েছে। এটা বিশ্বসম্প্রদায়ের জন্য মানবিক মূল্যবোধ ও অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ। রোহিঙ্গাদের নাগিরকত্ব, অধিকার ও মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠত না করতে পারলে বিশ্বে মানবতা বিপন্নতার মধ্যে পড়বে এবং উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠতে পারে।
এ সমস্যার সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জোরালো ভূমিকা ও জাতিসংঘের মাধ্যমে বহুপাক্ষিক সমাধানই কার্যকর পন্থা হিসেবে চিহ্নিত করে তিনি বলেন, কফি আনান কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিয়ে মর্যাদার সঙ্গে প্রত্যাবাসন ও রাখাইনে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনী মোতায়েন করে সেখানকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে সর্বোত্তম উপায়। একই সঙ্গে তিনি রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা, ধর্ষণ, জাতিগত নিধনের দায়ে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির ও শীর্ষ সামরিক জান্তাদের বিচারের মুখোমুখি করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার কথাও উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, শত শত বছর ধরে যে জাতি আরাকান এলাকায় বসবাস, যেখানে তাদের ৮-১০ বংশধর বসবাস করছে, ভূ-সম্পত্তি, ভাষা-সংস্কৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্য রয়েছে।
ড. মেসবাহ কামাল বলেন, রাষ্ট্রের অভ্যন্তরের বৈচিত্র্য রক্ষা সরকারের অপরিহার্য দায়িত্ব। তিনি আন্তর্জাতিক অভিবাসন, প্রত্যাবাসন, ভূ-রাজনীতিসহ বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন সরকার এমন একটি জটিল ও ভূ-রাজনৈতিক কৌশলগত বিষয়ে সমাধানে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পদক্ষেপ নিয়েছে এবং লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে মানবিক দিকে বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক সমাধানের প্রচেষ্টাও চালাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার সরকারকে অবশ্যই মর্যাদার সঙ্গে ফিরিয়ে নিতে হবে।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর সাধন রঞ্জন ঘোষ।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. শেখ মো. রজিকুল ইসলাম। এসময় বিভিন্ন স্কুলের ডিন, ডিসিপ্লিন প্রধান, শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের শিক্ষক, শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৮
এমআরএম/ওএইচ/