বুধবার (৩১ অক্টোবর) বেলা ২টার দিকে অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ। পরে ওই কিশোরীকে প্রায় মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নির্যাতনের শিকার কিশোরীর বাড়ি নেত্রকোনা তারাইল উপজেলায়। সে খিলগাঁও দক্ষিণ বনশ্রী এলাকার শরীফ চৌধুরীর বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতো।
গৃহকর্মীর মামাতো বোন শাহানাজ বাংলানিউজকে জানান, গত চার মাস আগে ওই শরীফ চৌধুরীর বাসায় তাকে কাজের জন্য দেওয়া হয়। প্রতি মাসে বেতন ধার্য ছিল পাঁচ হাজার টাকা। তারপর থেকে আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। একে একে চার মাস পেরিয়ে গেলেও আমরা তার সঙ্গে দেখা করতে না পেরে খিলগাঁও থানা পুলিশের কাছে যাই। পরে পুলিশ গিয়ে ওই বাসা থেকে কিশোরীকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে।
ঢামেক সূত্র জানায়, কিশোরী গৃহকর্মীর শরীর থেকে পা পর্যন্ত অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কোনো মতে ট্রলির উপরে বসে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে অঝোরে কাঁদছে সে। তার সঙ্গে কথা বলতে গেলে সে নিজেই জানায়, কোনো কাজের ভুল হলে তাকে রড দিয়ে পেটানো হতো।
নির্যাতিতা গৃহকর্মীর মুমূর্ষু অবস্থা দেখে ঢামেকে আসা বিভিন্ন রোগীর স্বজনরা এ ঘটনার বিচার দাবি করেছে। এক রোগীর স্বজন স্কুলশিক্ষিকা নাজমা বেগম বাংলানিউজকে জানান, বাচ্চা মেয়েটিকে দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না। যারা ওকে নির্যাতন করেছে তাদের যেন বিচার হয়।
খিলগাঁও থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন জানান, আমরা যখন মেয়েটিকে উদ্ধার করতে শরীফ চৌধুরীর বাসায় যাই, আমাদের দেখে তিনি অনেক ক্ষমতা দেখান। নিজেকে মানবাধিকার কর্মী বলে দাবি করেন। পরে এক পর্যায়ে নির্যাতিতাকে আমাদের সামনে হাজির করেন।
খিলগাঁও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানান, নির্যাতিতা কিশোরী গৃহকর্মীর পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে, তারা থানায় এলেই দ্রুত মামলা নেওয়া হবে। আপাতত শরীফ পুলিশ হেফাজতে আছে। তবে কিশোরীর শরীরে ভয়াবহ নির্যাতনের আঘাত দেখা গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৮
এজেডএস/এসএইচ