বৃহস্পতিবার (০১ নভেম্বর) বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গোপালগঞ্জ-কাশিয়ানী পর্যন্ত ৪৪ কিলোমিটার রেলরুটে রাজশাহী-গোপালগঞ্জগামী ‘টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস’ ট্রেনের উদ্বোধন করার পর দুপুর পৌনে ২টায় ট্রেনটি যাত্রা শুরু করে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক আবু জাফর মিঞা বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, দুপুর পৌনে ২টায় ‘টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস’ আটটি কোচ ইঞ্জিন সজ্জিতকরণসহ গোপালগঞ্জ থেকে কাশিয়ানীর উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ট্রেনটির যাত্রা উপলক্ষে গোপালগঞ্জ স্টেশনের আশেপাশের রাস্তা ও স্টেশন এলাকা সেজেছে অপরূপ সাজে। শুক্রবার (০২ নভেম্বর) থেকে সপ্তাহে দুইদিন বন্ধ থাকার পর বাকি দিনগুলো দক্ষিণাঞ্চল থেকে পশ্চিমাঞ্চল ছুটবে ট্রেনটি।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ব্যবস্থাপক রাজশাহী (জিএম/পশ্চিম) মজিবর রহমানের নেতৃত্বে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী রমজান আলী, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিঞা, প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী অসীম কুমার তালুকদার, পাকশী বিভাগীয় দপ্তরের পরিবহন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন, সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা নাসির উদ্দিনসহ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ২০ সদস্যের একটি দল ট্রেনে যাত্রা করছেন।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী রমজান আলী বাংলানিউজকে জানান, ১৯৩২ সালে রেলওয়ের রাজবাড়ীর কালুখালী থেকে গোপালগঞ্জের ভাটিয়াপাড়া রুটে ট্রেন চলাচল করতো। ১৯৯৭ সালের ১৯ আগস্ট ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়। তারপর কাশিয়ানী-গোপালগঞ্জ-টুঙ্গিপাড়া নতুন রেললাইন প্রকল্প ২০১১ সালে পুনরুদ্ধার কাজ শুরু হয়। ২০১৩ সালের ২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কালুখালী-ভাটিয়াপাড়া রেলরুটে ৩২০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে রেলপথ কাজের উদ্বোধন করেন। পরে কাশিয়ানী থেকে গোবরা পর্যন্ত রেললাইনে ২০১৫ সালের নভেম্বরে নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার পর চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে শেষ হয় এই রেলপথের কাজ। ২ হাজার ১১০ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থেকে গোবরা পর্যন্ত ৪৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এ রেললাইনটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। মধুমতি নদীর উপর একটি রেলসেতু, ছয়টি রেলস্টেশন, ৪৩টি কালভার্ট নিয়ে তৈরি এই রেলপথ। গত ২৭ সেপ্টেম্বর কাশিয়ানী থেকে গোপালগঞ্জ হয়ে চরবয়রা পর্যন্ত নতুন রেললাইনে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালিয়েছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
গোপালগঞ্জ-কাশিয়ানী রেল প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিঞা বাংলানিউজকে জানান, কেউ কখনো কল্পনা করেনি কোনদিনই এ রুটে আবারো ট্রেন চলবে। এই রেল যাত্রার মধ্য দিয়ে সারাদেশের সঙ্গে টুঙ্গিপাড়া এখন রেলওয়ে নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হলো। এটি বর্তমান সরকারের এক যুগান্তকারী উন্নয়ন, যা মাইলফলক হয়ে থাকবে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) নাজমুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, এখন থেকে খুব সহজে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ দেশের যেকোন প্রান্তে অল্প খরচে ট্রেনে নিরাপদ ভ্রমণ করতে পারবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০১৮
এনটি