বৃহস্পতিবার (১ নভেম্বর) রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি মিলনায়তনে শহীদ এম মনসুর আলী স্মৃতি সংসদ আয়োজিত জেলহত্যা দিবসের আলোচনাসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, ড. কামাল বিএনপিকে বাঁচানোর উদ্দেশ্যে রাজনীতির মাঠে নেমেছেন।
শহীদ মনসুর আলীকে আমি চাচা বলে ডাকতাম উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এই মহান নেতাকে বঙ্গভবনে ডেকে প্রধানমন্ত্রী হতে বলেছিল ষড়যন্ত্রকারীরা। তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চার নেতাসহ আরও নেতাদের গুলি করে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু মারা হয়নি। সেখান থেকে গ্রেফতার করে কারাগারে খুন করা হয়েছে। এর আগে থেকে মনসুর আলীসহ আওয়ামী লীগের সব নেতাদের গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল।
সভাপতির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বাবাকে (শহীদ এম মনসুর আলী) দেখেছি বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে যুদ্ধ ও দেশকে সাহসের সঙ্গে নেতৃত্ব দিতে। বাবার জানাজা আমি পড়তে পারিনি। কিন্তু আমার গর্ব আমি তার সন্তান। জাতীয় চার নেতা দেশকে ভালোবেসে বঙ্গবন্ধুর রক্তের সঙ্গে বেইমানি করেননি। শহীদ এম মনসুর আলী ন্যায়ের পক্ষে লড়াই করতে কখনো মাথা নত করেননি।
ড. কামালকে বঙ্গবন্ধু ড. কামাল বানিয়েছিলেন উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ড. কামাল নেতা হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর কারণে। কিন্তু এই শেষ বয়সে এসে কীসের লোভে তিনি মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তির পক্ষে কথা বলছেন?
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, বঙ্গবন্ধু ও চার নেতাকে হত্যা করার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়নি। হত্যা করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের রাজনীতিকে। বর্তমানে বিএনপি-জামায়াত জোট নিজেদের আশ্রয় ছেড়ে দিয়ে ড. কামাল, আ স ম আবদুর রবের আশ্রয় গিয়েছে। তারা মূলত তাদের ষড়যন্ত্রকে ঢাকতে এ কাজ করেছে।
‘সংলাপের আগে তারা প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে অনেক কটূক্তি করেছিল। প্রধানমন্ত্রী যখন সংলাপের জন্য রাজি হলেন ও নৈশভোজের দাওয়াত দিলেন তখন মির্জা ফখরুল ইসলাম বললেন, এই সংলাপ ফলপ্রসূ হবে না। তাহলে এর আগে আপনারা কেন সংলাপের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর নামে কটূক্তি করেছিলেন। আবার এখন আতিথেয়তা বয়কট করতে চাচ্ছেন। একথা বলালেন মান্নাকে দিয়ে। যিনি একসময় সকাল-বিকাল দু’বেলা ভাত খেতেন এই স্থানে। ’
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের গণহত্যা, জাতীয় চার নেতার জেল হত্যা, ১৫ আগস্টের বঙ্গবন্ধু হত্যা এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে হত্যার চেষ্টা একই সুতোয় গাঁথা।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের হত্যাকাণ্ডটা পারিবারিক হত্যাকাণ্ড বলে জানিয়েছিলেন মোস্তাক আহমেদ। এরপর দেশের শত্রুরা সরকারও গঠন করেছিল।
আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবাহান চৌধুরী, পানিসম্পদ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, সাবেক শিল্পমন্ত্রী দীলিপ বড়ুয়া, যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, শহীদ এম মনসুর আলী স্মৃতি সংসদের সভাপতি অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম, জনকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায়, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি তানভীর শাকিল জয় প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস স্মরণ করে শহীদ এম মনসুর আলীর কৃতিত্ব, অবদান ও দেশপ্রেম বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০১৮
এমএএম/এএ