ময়মনসিংহ বাংলাদেশের অষ্টম প্রশাসনিক বিভাগ। জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা জেলা নিয়ে এ বিভাগ গঠিত।
‘নবগঠিত ময়মনসিংহ বিভাগের বিভাগীয় সদর দফতর ও নতুন বিভাগীয় শহর স্থাপনের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত ভূমি অধিগ্রহণ, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া ও পুনর্বাসন’ প্রকল্পের আওতায় এমন উদ্যোগ।
এ প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ৭ হাজার ৭৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। এর পুরো ব্যয়ই সরকার বহন করবে। প্রল্পটি ২০১৯-২১ সালের জুন নাগাদ বাস্তবায়িত হবে।
এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ময়মনসিংহ জেলা শহরটি বর্তমান ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে অবস্থিত। প্রধানমন্ত্রী ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহরটি একটি আধুনিক ও বহির্বিশ্বের উন্নত শহরের আদলে স্থাপনের লক্ষ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের উভয় তীর ঘেঁষে গঠনের নির্দেশনা দিয়েছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহরের ভূমি ব্যবহার মহাপরিকল্পনা নিতে বলেছেন। সামনের একনেক সভায় প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হবে।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহরটি সদর উপজেলার ৮টি মৌজা নিয়ে প্রস্তাব করা হয়েছে। আটটি মৌজার সব জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে সরকারের অধীনে নেওয়া হবে। পরবর্তীতে বিভাগীয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিভিন্ন দফতর, অধিদফতরের মধ্যে বণ্টন, সুপরিকল্পিত আবাসন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, চিকিৎসা কেন্দ্র ও চিত্তবিনোদন কেন্দ্র নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হবে।
এতে করে একটি সুপরিকল্পিত, আধুনিক ও স্যাটেলাইট শহর গঠন করা সম্ভব হবে। ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহর স্থাপনের লক্ষ্যে সদর উপজেলার আটটি মৌজার প্রায় ৪ হাজার ৩৬৬ একর জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন পড়বে। এতে করে ২০১৭ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৬ হাজার ৪৫৫টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
আটটি মৌজার বসবাসরত ভূমিহীনদের স্থায়ী আবাসনের জন্য প্রস্তাবিত শহরের পার্শ্ববর্তী দুলালবাড়ী মৌজার প্রায় ৮০ একর খাস জমির প্রস্তাব করা হয়েছে। নবসৃষ্ট ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহর স্থাপনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের ভৌত, সামাজিক ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনা করে পুনর্বাসনের জন্য ৫২টি ব্লক করা হয়েছে। অধিকাংশ ব্লক গুলো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় করা হয়েছে। প্রায় ৩০ ভাগ পরিবার নিজস্ব এলাকায় পুনর্বাসনের সুযোগ পাবে। অন্যান্য পরিবারের বসতভিটা থেকে সর্বোচ্চ ৪০০ মিটার দূরে পুনর্বাসন ব্লকে সুযোগ থাকবে।
প্রস্তাবিত অধিগ্রহণ অঞ্চলে প্রায় ২ হাজার ২৭০টি কাঁচা বাড়ি, ১ হাজার ৪৭২টি আধা পাকা স্থাপনা, ৪ হাজার ৬৭৯টি টিনশেড, ২ হাজার ২৭০টি পাকা ও ২৯টি নির্মাণাধীন স্থাপনাসহ সর্বমোট প্রায় ৮ হাজার ৫০২টি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে প্রায় ৩২০ একর জমির প্রস্তাব করা হয়েছে। পুনর্বাসন এলাকা বসবাস উপযোগী করার জন্য ভূমি উন্নয়ন, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, ড্রেন, সীমানা চিহ্নিতকরণ দেয়াল ও কয়েকটি মসজিদ, উপাসনালয় নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৮
এমআইএস/এসএইচ