১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মধ্যরাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলী এবং আবু হেনা মোহাম্মদ কামারুজ্জামানকে।
ব্যাপক ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের কারাগারে পালিত হয়েছে জেলহত্যা দিবস।
এ উপলক্ষে সকালে নাজিমুদ্দিন রোডের কারাগারের অভ্যন্তরে চার নেতার প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন-কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, মহিউদ্দিন খান আলমগীর, বিএমএ সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, চার নেতার একজন সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ শাফায়েতুল ইসলাম, আইজি প্রিজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন, চার নেতার উত্তরসূরিরা, সরকারি কর্মকর্তারা এবং রাজনৈতিক নেতারা।
এর আগে আগত অতিথিরা কারাগারের অভ্যন্তরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর বঙ্গবন্ধু ও চার নেতার স্মৃতি সংরক্ষিত জাদুঘর ঘুরে দেখেন।
এরপর শহীদ এম. মনসুর আলী স্মৃতি জাদুঘরে মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস বিষয়ক একটি প্রামাণ্যচিত্র উপভোগ করেন উপস্থিতিরা। সেখানে দেখানো হয় জাতীয় চার নেতা হত্যার সঠিক ইতিহাস।
মিলাদ মাহফিল শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ৩ নভেম্বর সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় জেলহত্যা দিবস পালন করা হয়। এখানে শহীদ পরিবারের সদস্যরা আছেন, মন্ত্রী পরিষদের সদস্যরা আছেন।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনকালীন আমাদের যে নির্বাচন কমিশন আছে তাদের দায়িত্ব আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা। আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের দিক দিয়ে অনেক সক্ষমতা অর্জন করেছে। কাজেই কেউ যদি বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তা মোকাবিলা করবে।
চার নেতার একজন সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ শাফায়েতুল ইসলাম বলেন, আমি আশা করবো ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যা, এরপর জাতীয় চার নেতা হত্যাকাণ্ডের যেসব আসামিদের বিচার হয়নি তাদের অতি দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করা হোক। তাছাড়া এই হত্যাকাণ্ডের অন্তরালে যারা রয়েছেন তাদেরও বিচার হোক। এসব লোকজনদের সম্পর্কে দেশ-জাতি জানতে চায় ও তাদের বিচারের কাঁঠগড়ায় দেখতে চায়।
প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন শেষে আইজি প্রিজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন বলেন, এই কারাগার মুক্তিযুদ্ধের ও বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের অনেক স্মৃতি বহন করছে। এ কারণে সরকারের পক্ষ থেকেও কল্পনা হচ্ছে এটিকে একটি বিনোদন কেন্দ্র ও জাদুঘরে পরিণত করার। যেটা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এখনও তিনটি জাদুঘর এখানে রয়েছে তবে তা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত না। বিশেষ বিশেষ দিবসে একটি খুলে দেওয়া হয়। আর আমরা আশা করছি, ২০২০ সালের মধ্যে এই জাদুঘর ও বিনোদন কেন্দ্রের প্রকল্প সম্পন্ন হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৩ ঘণ্টা, নভেম্ববর ০৩, ২০১৮
এমএএম/পিএম/আরআর