মুক্তিকামী বাঙালিকে স্বাধীনতার পথ দেখাতে গিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জীবনের একটা দীর্ঘ সময় অর্থাৎ ৩ হাজার ৫৩ দিন কাটাতে হয়েছে কারাগারে। সেই সূত্রে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার জাতির জনকের স্মৃতি-বিজড়িত এলাকা।
পুরাতন কারাগারের দেওয়ানি সেলে বঙ্গবন্ধু দীর্ঘদিন ছিলেন। যেখানে তার স্মৃতিকে ধরে রাখতে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কারা স্মৃতি জাদুঘর’। এটি ২০১০ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন।
এর সামনেই বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে রোপণ করা একটি কামিনী গাছ।
কারা সূত্রে জানা গেছে, ৬০ এর দশকে বঙ্গবন্ধু নিজ হাতে খেয়ালে কিংবা বেখেয়ালে কামিনী ফুলের এই গাছের চারাটি লাগিয়েছিলেন। প্রায় অর্ধ শতাব্দীর স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা সেই কামিনী গাছ এখন মহীরুহ। এখন বছরের একটা নির্দিষ্ট সময় কামিনী গাছটি অসংখ্য ফুলের ভারে নুয়ে পড়ে। সুগন্ধি ছড়িয়ে দেয় বাতাসে। এই গাছটি যেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জীবন্ত স্মৃতি। গাছটির চারপাশে ছয় দফা দাবি ছয়টি স্তম্ভে লিপিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
এছাড়া জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর নিত্য ব্যবহৃত জিনিসপত্র। সেখানে রয়েছে তার ব্যবহৃত চেয়ার-টেবিল, খাবার প্লেট, বিছানাপত্র ও হাঁড়ি-পাতিল।
এছাড়া পুরাতন কারাগারে আরও রয়েছে ‘জাতীয় চার নেতা কারা স্মৃতি জাদুঘর’। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে নৃশংসভাবে জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে হত্যা করা হয়। সেই সেলগুলোও সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে তাদের ব্যবহৃত সামগ্রী। সামনেই চার নেতার প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয়েছে। বাধাই করে লাল রঙে রাঙানো একটি স্থান সংরক্ষণ করা হয়েছে। যেখানে চার নেতার মরদেহ হস্তান্তরের আগ পর্যন্ত রাখা হয়েছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৮
পিএম/আরআর