সাততলা বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাড়ে তিন বছর বয়সের বুকের মানিক মিনহাজুর রহমান মিনহাজের মৃত্যুর পর তার সে বুলিগুলো আওড়াতে আওড়াতেই আহাজারি করছিলেন মা নাসরিন আক্তার। বুধবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে পুরান ঢাকার হোসনি দালান রোডের ওই বাড়ির ছাদ থেকে মিনহাজ পড়ে গেলে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
মিনহাজের বাবার নাম মিজানুর রহমান। তাদের বাড়ি নেত্রকোনা সদর উপজেলার নন্দীপুর এলাকায়। মিনহাজ তার বাবা-মায়ের সঙ্গে হোসনি দালাল রোডের জাফর মিয়ার সেই সাততলা বাড়ির ছাদে একরুমে ভাড়া থাকতো।
ঢামেকে ছেলেকে মৃত ঘোষণার পর নাসরিন আক্তার বিলাপ করতে থাকেন। তিনি বলতে থাকেন, ‘দুপুর থেকেই আমার বাবা পাকনা পাকনা কথা বলতে থাকে। আমি মরে যাবো, আমায় ছাড়া কিভাবে থাকবা মা? আমার দাদা কবরে গিয়েছে, আমি দাদার কাছে গিয়ে শুয়ে থাকবো। ’
ঢামেকে ছুটে আসা নাসরিনের স্বজনরা জানান, মিনহাজের দাদা আশরাফ খান পাঠান দেড় মাস আগে মারা যান। তিনি মিনহাজকে অনেক আদর করতেন। সে কথাই বিলাপ করতে করতে নাসরিন বলেন, ‘হঠাৎ আজ দুপুর থেকেই মিনহাজ ওর দাদার কথা বলে...। আমি এখন কী করবো? বাবারে, তোকে ছাড়া কিভাবে থাকবো? আমার সব শেষ হয়ে গেলো, তখন বুঝতে পারিনি কেন এতো পাকনা পাকনা কথা বলতেছিলি!’
স্বজনরা জানান, রুমের সামনে ছাদে খেলছিল মিনহাজ। তখন নাসরিন নামাজে ছিলেন। নামাজ শেষ করে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও মিনহাজকে বাসায় পাচ্ছিলেন না নাসরিন। নিচ থেকে চেঁচামেচি শুনে সেখানে ছুটে গিয়ে দেখেন পাশের একতলা বাড়ির ছাদে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে মিনহাজ। তখন তাকে নামিয়ে ঢামেকে নিয়ে এলেও বাঁচানো যায়নি।
ছাদের রেলিং থাকা সত্ত্বেও মিনহাজ কিভাবে নিচে পড়ে গেলো সেটাই নাসরিন-মিজান বা স্বজনরা বুঝতে পারছেন না বলে জানান।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু মিয়া বাংলানিউজকে জানান, মিনহাজের মরদেহ ময়নাতদন্তের হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৮
এজেডএস/এইচএ/