তবে বসে নেই কর্তৃপক্ষ। ধুলোবালিকে বাগে আনতে ছিটাচ্ছে পানি।
ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে সরকারি ছুটির দিন গুলিস্তান এলাকা অনেকটাই নিরিবিলি। এসময় গোলাপ শাহ মাজার এলাকায় সড়ক বিভাজকের কাছে জড়ো করে রাখা ময়লা ‘কম্পোজিটর গাড়ি’তে তুলছেন তিনজন পরিচ্ছন্নকর্মী। পলিথিন, কাগজ, বোতল, প্লাস্টিকের বিভিন্ন উচ্ছিষ্টাংশ দিয়ে ভরা ময়লার স্তুপ।
ডালা ভরে ময়লাগুলো গাড়িতে তোলার সময় ধুলো-বালির ছড়িয়ে যাচ্ছিলো চারদিকে। ময়লা উঠয়ে নেওয়ার পরও খানিকটা ধুলোবালি পড়ে থাকছে সড়কের ওপর।
পরিচ্ছন্নকর্মীদের একজন মো. খোকন বলেন, প্রতিদিন তিনবার এই সড়কের ময়লা পরিষ্কার করা হয়। আগে দুইবার ছিল। এদিন ভোরে আজানের সঙ্গে সঙ্গে তারা ময়লা পরিষ্কার করা শুরু করেছেন। শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে ধুলোবালির পরিমাণ বাড়ছে বলে জানান খোকন।
বাতাসে ধুলোবালির আধিক্য থাকায় পথচারীদের অনেকেই এখন মাস্ক ব্যবহার করেন। আর মাস্ক ব্যবসাও বেশ জমেছে হকারদের। পাঁচ টাকা ও ১০ টাকার মাস্কগুলোই বেশি ব্যবহার করেন নিত্য পথচলা মানুষ।
জিরো পয়েন্ট এলাকায় আব্দুল গণি রোডের মাথায় ফুটপাতে ছোট টেবিল বসিয়ে প্রতিদিন পত্রিকা বিক্রি করেন নুরুল হক। প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার ময়লা পরিষ্কার করতে দেখেন তিনিও। বললেন, দুই-তিনবার ময়লা সরানো হলেও গুলিস্তান এলাকায় মানুষের জমায়েত বেশি, তাই ময়লা-আবর্জনাও বেশি হয়। ময়লা-আবর্জনায় ধুলোবালিও বেড়ে যায়।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতায় এই এলাকায় কয়েকটি জায়গায় সড়কের সৌন্দর্য বৃদ্ধির কাজ, গাড়ির ধোয়ার কারণেও ধুলোবালি বাড়ছে। তবে সকালে পানিও ছিটানো হয় বলে জানান এই পথে চলাচলকারীরা।
দক্ষিণ সিটির মতো উত্তর সিটিতেও বেগম রোকেয়া সরণিতে ধুলোবালির কারণে যন্ত্রণায় থাকতে হয় বাসিন্দা এবং পথচারীদের। মেট্রোরেলের নির্মাণকাজের কারণে খোঁড়াখুঁড়ির মাটি উপরে রাখায় শুকিয়ে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে ধুলিকণা। তবে আগের থেকে অনেকটাই পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেছে বলে জানান আগারগাঁও তালতলা এলাকায় সড়কের পাশে ‘মক্কা বিরিয়ানি’ দোকানের কর্মচারী আমান।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি বলেন, অল্প কিছুক্ষণ আগে পানি ছিটিয়েছে। এই সড়কে ময়লার সঙ্গে মাটি-কাদা-পানি বেশি। আর রোদে শুকিয়ে গাড়ির চাকার সঙ্গে মিশে ধুলোবালিতে পরিণত হয়ে উড়ে যায়। তবে আগের থেকে অনেকটাই কমেছে বলে জানান তিনি।
বেগম রোকেয়া সরণির পাশে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সেকেন্ড গেট’ এলাকা থেকে মিরপুর-১২ নম্বর পর্যন্ত চলছে মেট্রোরেলের নির্মাণযজ্ঞ। আর এ কারণেই দিনের পর দিন ধুলোবালি-যানজটের কষ্টে রয়েছেন এই এলাকা ও এই পথ দিয়ে চলাচলকারী মানুষ। রিকশাচালক থেকে শুরু করে অনেক মানুষই বাধ্য হয়ে মাস্ক ব্যবহার করেন।
তবে ছুটির দিনে সরেজমিনে গিয়ে সড়কে তেমন ধুলোবালি দেখা যায়নি। ভাঙা-চোরা সড়কের অনেক স্থানেই কার্পেটিং করা হয়েছে। এতে চলাচল সহজ হয়েছে মানুষের।
চলাচল সহজ এবং ধুলোবালি মুক্ত করতে বেশি বেশি পানি ছিটানো উচিত বলে মনে করেন মিরপুর সাড়ে-১০ নম্বর এলাকার তৈয়ব আলী।
সেই এলাকায় মেট্রোরেল নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের ট্রাফিক-কর্মী আনোয়ার হোসেন মুখে মাস্ক, মাথায় কাপড় বেঁধে ক্যাপ পরে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি বলেন, এখন বার বার পানি ছিটায়। সে কারণে ধুলো কমেছে। এতে স্বস্তি এসেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৮
এমআইএইচ/আরআর