সার্বজনীন শিশু দিবস-২০১৮ উপলক্ষে বুধবার (২১ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে পিসিটিএসসিএন (শিশু পাচার প্রতিরোধে সমাজকে শক্তিশালী ও নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি) এর উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
পিসিটিএসসিএন একটি কনসোর্টিয়াম সংগঠন (বিভিন্ন সংস্থা/সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত)।
সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশের যত শিশু মিসিং বা ট্রাফিকিংয়ের ঘটনা ঘটে তার মাত্র ২৭ শতাংশ দৈনিক পত্রিকায় ও ১২ শতাংশ টিভি নিউজে দেখা যায়। ভারতের কলকাতা, হায়দ্রাবাদ ও মুম্বাইভিত্তিক একটি চক্র দেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে একটি শক্তিশালী পাচারের নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। যারা নারী-শিশু ও কিডনি পাচারে সক্রিয়।
মানবপাচারের মাসিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৭৮ জন শিশু পাচার হয়েছে ও উদ্ধার হয়েছে ৬০ জন। আর একই সময়ে ১২৩ জন শিশু পাচার হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে আর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত এসব দেশে প্রায় ১০ লাখ নারী ও শিশু পাচার হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন সংগঠনটির শিশু প্রতিনিধি শারমিন সুলতানা স্বর্ণা ও রোকন। তারা বলেন, নারী ও শিশু পাচারের হুমকির কারণে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল পরিবারের সন্তানেরা ব্যাপক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ভালো বেতনের কাজ দিয়ে তাদের প্রলোভন দেখিয়ে পরিবারের সম্মতি নেওয়া হয়। পরে বয়স বাড়িয়ে তাদের পাচার করে দেয় এ চক্রের সদস্যরা।
নারী ও শিশুদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনটির প্রতিনিধি শারমিন সুলতানা স্বর্ণা বলেন, পাচার নিয়ে পৃথিবীতে বিশাল বাণিজ্য রয়েছে। যার মূল উদ্দেশ্য যৌনদাসত্ব, জোরপূর্বক শ্রম, বাধ্যতামূলক শোষণমূলক শ্রম ও অঙ্গ পাচারের মতো কার্যকলাপের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন।
‘এটি শিশু অধিকারের সর্বোচ্চ লঙ্ঘন বলে বিবেচিত হয়। এ কারণে তারা মানুষ হিসেবে বেড়ে ওঠা, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, মর্যাদাসহ সব ধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। ’
নারী ও শিশু পাচার রোধে সংবাদ সম্মেলনে সুপারিশ আকারে বেশ কিছু দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হচ্ছে- সব ধরনের অধিকার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ, শিশুর প্রতি সব ধরনের সহিংসতা নিরসনে সরকারি-বেসরকারি কাজের সমন্বয় ও জোরদার, শিশু অধিকার সনদ ও শিশু আইনের আলোকে শিশুর বিকাশের এবং সুরক্ষার পদক্ষেপ গ্রহণ, শিশুদের বিষয়টি সংযুক্ত করে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমনে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০১৮-২০২২ বাস্তবায়ন উল্লেখযোগ্য।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ইনসিডিন বাংলাদেশের ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম খান, এসইইপি-এর সমন্বয়কারী মো. জাহিদ হোসেন, কমিউনিটি পার্টিসিপেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের সমন্বয়কারী শরীফুল্লাহ রিয়াজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৮
এমএএম/এমএ