বৃহস্পতিবার (২২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে প্রতিবন্ধীদের জন্য কর্মরত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনটি পরিচালিত হয় শারিরীক প্রতিবন্ধী মানুষদের উপস্থাপনায়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবন্ধীরা বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের লক্ষ্যে দেশের সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। আগামী পাঁচ বছরও এসডিজি বাস্তবায়নে সরকার বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করবে। কিন্তু সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী হিসেবে প্রতিবন্ধীদের বাদ দিয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করলে এসডিজি অর্জন করা কোনভাবেই সম্ভব হবে না। কেননা, কোনো প্রান্তিক নাগরিক গোষ্ঠীকে পেছনে ফেলে এই অর্জন সম্ভব নয়। সাম্প্রতিক সময়ে অনুষ্ঠিত ‘গ্লোবাল ডিজএবিলিটি সামিট ২০১৮’ সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে সরকার প্রতিবন্ধিতা বিষয়ক বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি তথা অঙ্গীকার করেছেন। এ সকল অঙ্গীকার পূরণের লক্ষ্যেই অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাসহ সকল রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনায় প্রতিবন্ধীদের বিষয়গুলো আবশ্যিককভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। তাই এগুলো নির্বাচনী ইশতেহারে সংযোজন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এ সময় তারা নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখের জন্য দাবিনামা উপস্থাপন করেন। সেগুলো হলো- প্রতিবন্ধীদের সংগঠন এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার নিয়ে কর্মরত সংস্থাকে সম্পৃক্ত রেখে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সঠিক পরিসংখ্যান নিরূপণ ও ডাটাবেজ বা তথ্য সম্ভার তৈরি করা। সংবিধান, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আইন অনুযায়ী তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায়ে সকল দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সব ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
এছাড়া স্থানীয় সরকার থেকে জাতীয় সংসদে প্রতিবন্ধীদের প্রত্যক্ষ ও উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতের পাশাপাশি একাদশ সংসদে নারীর জন্য সংরক্ষিত ৫০টি আসনের মধ্যে অন্তত দুইটি আসনের যোগ্য প্রতিবন্ধী নারীকে নির্বাচন করা। প্রচলিত আইন অনুসারে সরকারি-বেসরকারি ভবন, অফিস-আদালত, ব্যাংক, মার্কেট, স্কুল-কলেজসহ সকল গণ স্থাপনায় প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করা। শ্রবণ, বাক ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ সকল ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তির উপযোগী ভাষা-যোগাযোগ এবং স্বাস্থ্যসেবা, ন্যায়বিচার, ই-সার্ভিসসহ শিক্ষা উপকরণ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করা।
প্রতিবন্ধিতা বিষয়ক গৃহীত কার্যক্রমে নারী ও শিশুসহ সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সমসুযোগ, সমঅধিকার ও কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহাল ও সুষ্ঠু বাস্তবায়নসহ সংবিধান মোতাবেক বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩’র তফসিলে বর্ণিত ৮২টি কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রতিবন্ধী বিষয়ক পৃথক অধিদফতর স্থাপন, জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও প্রয়োগ, অ্যালোকেশন অব বিজনেস সংস্কার, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সার্বিক উন্নয়নের বিষয়টিকে পদ্ধতিগতভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এছাড়া জাতীয় বাজেটে, আইনে বর্ণিত কার্যক্রম বাস্তবায়ন বাবদ বরাদ্দ বর্ধিত করা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৮
এমএএম/টিএ